করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধের ১৩ তম দিনে অকারণে বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এখন পর্যন্ত রাজধানীতে মোট গ্রেপ্তার হয়েছেন ৮৫০৪ জন। এছাড়া ১১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে ট্রাফিক বিভাগ ৬৯৬টি গাড়ির বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার ডিএমপির (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম বাংলাদেশ জার্নালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, লকডাউনের ১৩তম দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিএমপির ৮টি বিভাগের রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা এলাকা থেকে ৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অকারণে ও নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হওয়ায় ও বিধিনিষেধে প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১১৯ জনকে দুই লাখ ১৪ হাজার ৪০০ টাকা।
এদিকে বুধবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে শিথিল করা হয়েছে। আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিনে আজ রাজধানীর সড়কগুলোর বিভিন্ন জায়গায় তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে।
গণপরিবহনগুলো না চললেও প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, জরুরি সেবা সংস্থার গাড়ি এবং খোলা থাকা অফিসের কর্মীদের বহনের গাড়িতে অনেকটাই পুরনোরূপে ফিরেছে রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যালগুলো। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্ট থাকলেও তা চলছে ঢিলেঢালাভাবেই।
লকডাউনের ১৩তম দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিধিনিষেধ পালনে অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে নগরীর দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কমলাপুর, কাকরাইল, পল্টন, শাহবাগ, বাংলামোটর, কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রায় একই রকম চিত্র পাওয়া গেছে।
ফকিরাপুলে দায়িত্বপালনকারী পুলিশ সদস্য ইসমাইল বলেন, আজ যানবহন আর রিকশার সংখ্যা বেশি দেখছি। রাস্তায় যানজটও আছে। প্রতি সিগন্যালে দুই থেকে তিন মিনিট করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ২৩ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। তবে ঈদের পর আবারও ১৪ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এতে বলা হয়েছে- ১৪ জুলাই মধ্য রাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো। একইসঙ্গে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনষেধ আরোপ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আযহা উদ্যাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আরোপিত সকল বিধি-নিষেধ শিথিল করা হলো। তবে এ সময়ে সর্বাবস্থায় জনসাধারণকে সতর্কাবস্থায় থাকা এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৩ জুলাই সকাল ০৬টা থেকে ০৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।