ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কেরানীগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮৫ লাখ টাকা ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতাররা হলো- ডাকাত সর্দার সোহাগ মাঝি, মো. দেলোয়ার, মো. জয়নাল হোসেন, মো. সোহেল, মো. জনি ও মো. আজিজ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা, ১টি মাইক্রোবাস এবং ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গতকাল (২৫ নভেম্বর) ডিএমপির গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে কোতোয়ালি জোনাল টিম রাজধানীর দিয়াবাড়ী ও কাজলা এলাকা, ঢাকা জেলার সাভার থানা এবং পটুয়াখালী সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, গত ১৩ নভেম্বর দুপুর দেড়টায় ব্যবসায়ী কেরামত আলী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন দড়িগাঁও বাজারে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাগে করে নগদ ৮৫ লাখ টাকা নিয়ে পিকআপে করে আবদুল্লাপুর একটি ব্যাংকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে অজ্ঞাত ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল ব্যবসায়ীর গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। এরপর ডাকাতরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা লুট করে মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ঘটনায় ডিএমপির লালবাগ গোয়েন্দা বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
মশিউর রহমান বলেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ডাকাত দেলোয়ার হোসেনকে রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার তথ্যমতে সাভার থানার কাউন্দিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপর তিনজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ডাকাতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পটুয়াখালী সদর থানা এলাকা ডাকাত দলের সর্দার সোহাগ মাঝিকে ওই ডাকাতির কাজে ভাগে পাওয়া ১৯ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি মোটরসাইকেল এবং ১ লাখ টাকাসহ আরও একজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
উপকমিশনার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকতরা জানিয়েছে- গ্রেফতার ব্যক্তিরা ডাকাতি করার জন্য বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান করে। ব্যবসায়ীসহ আর্থিক লেনদেনকারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। যেসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই- এরকম নিরিবিলি জায়গায় সুযোগ বুঝে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদের গতিরোধ করে। ভিকটিমদের নামে মামলা-ওয়ারেন্ট আছে বলে টাকার ব্যাগসহ গাড়িতে তুলে নেয়। ডাকাতরা তাদের সুবিধামতো জায়গায় টাকা-মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে নির্জন এলাকা বা রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ডাকাতির কাজে তারা হ্যান্ডকাপ, ওয়্যারলেস ও খেলনা পিস্তল ব্যবহার করত।