বিদেশি কূটনীতিকদের ভেবেচিন্তে কথা বলা করা উচিত: ইসি

কোনও বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের ভেবেচিন্তে কথা বলা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান। কূটনীতিকদের জন্য জেনেভা কনভেশন বাইবেল উল্লেখ করে আনিছুর রহমান বলেন, বিদেশিরা কতটুকু কী বলতে পারে করতে পারেন এটা তাদের বিবেচনায় রাখা উচিত। যারা বলেন তাদের আরও ভেবেচিন্তে কথাবার্তা বলা ঠিক হবে বলে মনে করি।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। এর আগে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় জাপানি কূটনীতিদের মন্তব্যের জের ধরে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত কিছু মন্তব্য করেছেন, এর আগেও বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। এই বিষয়ে আপনাদের মন্তব্য কী?

জবাব দিতে গিয়ে প্রথমে কোন প্রেক্ষাপটে মন্তব্য করেছেন তা স্পষ্ট না হলে কথা বলা ঠিক হবে না বলে জানান কমিশনার আনিছুর। তবে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম আরো ব্যাখ্যা চাইলে একটি পর্যায়ে তিনি কূটনৈতিক শিষ্ঠাচারসহ নানা বিষয়ে মন্তব্য করেন।

নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিকদের মন্তব্য বিভিন্ন ডাইমেনশন থেকে হতে পারে উল্লেখ করে আনিছুর বলেন, কোন প্রেক্ষাপটে কী বলেছে, এটা তারাই ভলোই জানেন। ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করতে চাই না। এটা তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। তারা যেটা বলেছেন সেটা সত্য কী মিথ্যা সেটা তারাই ভালো জানেন।

কূটনৈতিক বিষয় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী হয় উল্লেখ করে এই কমিশনার বলেন, প্রত্যেকটি দেশেরই নিজস্ব একটি স্বকীয়তা আছে। প্রত্যেকেই তার স্বকীয়তার মধ্যেই থাকে। সেখানে কতটুকু আছে এটা তাদের বিবেচনা করা উচিত। কতটুকু বলতে পারি। কতটুকু করতে পারি এটা তাদের বিবচেনায় রাখা উচিত। তারা (কূটনীতিকরা) বিবেচনা করে দেখতে পারে তারা কতটা তার মধ্যে ছিল বা আছে বা করছে। আমি মনে করি জেনেভা কনভেশনের মধ্যে কূটনীতিকদের থাকা ভালো। যার কাজ তাদের করতে দেওয়া ভালো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার জানা নেই পৃথিবীর কারও ভোট দিয়ে (বিদেশিরা) মাথা ঘামায় কিনা বা কেউ বলে কিনা বা পরামর্শ দেয় কিনা। তারা মন্তব্য করেন এজন্য সাহস নিশ্চয়ই কেউ করে দিয়েছেন। না হলে সাহস পান কেন? আমরা তো মনে করি প্রত্যেকেরই বিচরণের ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতা আছে। এমন ইয়ে নেই সর্বত্র তিনি বিচরণ করবেন। কোনও না কোনও জায়গায় বাধা আছে। এজন্য বলছি জেনেভা কনভেশন হচ্ছে তাদের জন্য বাইবেল। সেটা অনুসরণ করলে তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধতা থাকে। কিন্তু যারা বলছেন (কথা) তারা সেটা কতটা করছেন তারাই ভালো বোঝেন। কারণ তারা কূটনীতিক-কূটনীতিক আচরণ কীভাবে করতে হয় এটা তা বুঝেন। আমার চেয়ে বেশি।

মানুষ এখন সবই বুঝে উল্লেখ করে আনিছুর বলেন, তাদের দৃষ্টিভঙ্গী এখন ব্যাপার না। তারা ভালোমন্দ বিচার বিশ্লেষণ করবে। আমরা খারাপ কাজ করে থাকি আমার ওপর অনাস্থা যদি আসে। আমরা ইচ্ছা করলেও তা ফিরিয়ে নিতে পারবো না।

ভোটে বিদেশিদের দরকার হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এই কমিশনার জানতে চান, ভোটের ক্ষেত্রে বিদেশিরা কি সরাসরি কিছু করতে পারে? জেনেভা কনভেশন অনুযায়ী কতটুকু বলতে পারেন সেটা আপনারা জানেন। অনেককেই অনেক কিছু বাধা দেওয়া আছে। কে কী বলতে পারেন- আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে। কতটুকু তারা বলতে পারেন। তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় আমরা বলতে পারি কি না? জেনেভা কনভেনশনে বলা আছে। সেই অনুযায়ী তাদের চলাফেলা করার কথা। তারা এটা বলছেন তা ব্যক্তিগত কথা না তার দেশের কথা সেটাও পরিষ্কার হওয়া উচিত বলে মনে করি। ব্যক্তি হিসেবে অনেক কথা বলতে পারি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অনেক কথা বলতে পারবো না। ব্যক্তিগত বিষয় আছে। আরেকটি হলো তার দেশ।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের তো ভালোভোট করার মাথাব্যথা আছে। গত আটমাসে কী শুনেছেন আমরা খারাপ ভোট করবো। ভালো ভোট করার জন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে শেষ দিন পর্যন্ত। আমরা একলা চাইলে তো পাবো না। রাজনৈতিক দল, জনগণ, প্রশাসন ও আমরা মিলিয়ে করতে হবে। আমরা ভালো ভোট করতে চাই। এজন্য যাদের সহযোগিতার দরকার আছে, তাদের সহযোগিতা চাই। এখন বিদেশিরা করবে নাকি দেশিরা করবে তাদের বিষয়। আমাদের প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলকে নিয়ে কাজ করতে হবে। ভোটের মাঠে তারাই থাকবে। তারা যদি মাঠে থাকে এক রকম হবে। মাঠ ছেড়ে দিলে অন্যরকম হবে। তাদের মাঠে থাকতে হবে।

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img