তোফাজ্জল ইসলাম, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে দখল করে গড়ে উঠা দোকানপাট বারবার উচ্ছেদ করলেও আবারও স্থাপনা নির্মাণ করেন দখলদার দোকানিরা। দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, উচ্ছেদ পরবর্তী সংরক্ষণ ও নজরে না রাখার কারণে উচ্ছেদে কোনো লাভ হয় না বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বুধবার দিনব্যাপী সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের ওয়েজখালী থেকে জাউয়াবাজার পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
এসময় পথচারীরাদের মধ্যে আলোচনায় শোনা যায়, ‘এসব করে লাভ কী, কাল থেকেই আবার স্থাপনা হবে, দখল হবে মহাসড়ক।’
দিরাই পয়েন্টের চায়ের দোকানী হোসাইন নামের এক ছেলে তার ভাষ্যতে বললেন, সকালে এসে মেশিন লাগিয়ে দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছে। গতবছর ভাঙার পর যে টাকা দিয়ে দোকানটি বানিয়েছিলাম, এবার সে টাকা এখনও ওঠেনি। দোকানকোঠা বানানোর সময় বাধা দিলে গরিব মানুষের ক্ষতি কম হতো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু উচ্ছেদ নয়, দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, উচ্ছেদ পরবর্তীতে সংরক্ষণ ও দেখাশোনা না করার কারণে উচ্ছেদে কোনো লাভ হয় না। এতে প্রতিবছর উচ্ছেদ করতে গিয়ে অনেক টাকা অপচয় হয় সরকারের, তা কোনো কাজে আসে না।
ওয়েজখালীর বাসিন্দা মুদি দোকানী মো. আজিজুর রহমান প্রকাশ্যে মিডিয়ার কাছে বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অবহেলার কারণে সরকারের অনেক টাকা ব্যয় হয়। উচ্ছেদ করে যাওয়ার পরে আবারও দখলদাররা দোকানকোঠা নির্মাণ করেন। উচ্ছেদের কোনো ফল হয় না। উচ্ছেদ করার পরেও যদি তদারকি করা হয়, তাহলে কেউ আবারও দখলে নিয়ে দোকান নির্মাণ করতে পারবে না। কিন্তু উচ্ছেদ পরবর্তী এসব বিষয়ে তারা কোনো গুরুত্ব দেয় না।
একই এলাকার দোকানী আফতারুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন পর পর উচ্ছেদ করা হয়, তারা যাওয়ার পর আবারও দখলদাররা দখলে যান। তারা এসব দেখেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। একবার ভেঙে ফেলার পর আবারও দখলে গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাহলে কেউ দ্বিতীয়বার স্থাপনা নির্মাণের সাহস পাবে না।
পৌর শহরের বড়পাড়ার বাসিন্দা মো. সুলেমান মিয়া বললেন, মানুষ খালি জায়গা দেখলে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করে। আমাদের ধারণা সড়ক বিভাগের অসৎ কর্মচারীরাই ভাঙার পর আবারও স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ করে দেন।
কর্মকর্তারা এই পথ দিয়েই যাতায়াত করেন। কখন এসব দোকান নির্মাণ করা হয় তারাও দেখেন। করার সময় যদি বাঁধা প্রদান করা হয়, তাহলে এসব অবৈধ দোকানপাঠ আর নির্মাণ হবে না।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জ সিলেট সড়কে যেসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে বুধবার সেগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমাদের শ্রমিক সংকট রয়েছে।অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে যাওয়ার পরে রাতের আঁধারে আবারও দোকানপাট নির্মাণ করা হয়, এজন্য বারবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।তাহলেই অবৈধ স্থাপনা ঠেকানো সম্ভব।
এমজে/