সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচায় জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মিঠুসহ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ভাটারা, বনশ্রী ও মিরপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিডনি কেনাবেচা এই চক্রের মোট সদস্য ১৫-২০ জন। তারা মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি কেনাবেচা করে থাকেন। এই চক্রের সদস্যরা পাশের দেশে অবস্থানরত কিডনি কেনাবেচা চক্রের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে শতাধিক মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠিয়েছেন বলে জানা যায়।
আবদুল্লাহ আল মোমেন জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা এই চক্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন। প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীপ্রতি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা নিতেন। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে মাত্র চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে অগ্রিম দুই লাখ টাকা দিতেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রের মূল হোতা ও অন্যতম অভিযুক্ত মো. শহিদুল ইসলাম ২০১৬ সালে নিজের চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশে যান।
সেখানে তিনি কিডনি প্রতিস্থাপনের রোগীদের ব্যাপক চাহিদা দেখতে পান এবং নিজেই কিডনি প্রতিস্থাপনের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেন। পাশের দেশের কিডনি কেনাবেচার চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে তিনি এখানে কিডনি কেনাবেচা চক্রের সঙ্গে সহযোগিতায় একটি দালাল চক্র প্রতিষ্ঠা করেন।
গ্রেফতার অপর চারজন হলেন মিজানুর রহমান (৪৪), আল মামুন মেহেদী (২৭), মো. সাইমন (২৮) ও মো. রাসেল হোসেন (২৪)।
তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর সঙ্গে চুক্তির অ্যাফিডেভিট কপি, ভুক্তভোগীদের পাসপোর্টসহ মোট ১৪টি পাসপোর্ট, কিডনি ক্রসম্যাচিংয়ের বিভিন্ন দলিলাদি, দেশি-বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফটোকপি, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও এটিএম কার্ড, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের জাল সিলমোহর, খালি স্ট্যাম্প, সিপিইউ, মুঠোফোন ও সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
ইউআর/