উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শনিবার (২১ আগস্ট) এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয়েছে।
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক শাহ আজম শান্তনু জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে তাকে নিয়ে উড্ডয়ন করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
তিনি আরও বলেন, হাসান স্যারকে ১০টার কিছু আগে এয়ারপোর্টে আনা হয়। রানওয়েতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসে সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর স্যারকে নিয়ে উড্ডয়ন করেছে। আশা করছি এক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে যাবেন। স্যারের সঙ্গে তার ছেলে আছেন।
বুধবার (১৮ আগস্ট) পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এ কথাসাহিত্যিক অসুস্থ হয়ে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসান আজিজুল হকের ছেলে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে বাবাকে স্যালাইন ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বাসাতেই তার ইসিজি করানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাবা বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও হার্টে সমস্যা ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন। বর্তমানে বেশি ভুগছেন হাইপোন্যাট্রিমিয়ায়।
চিকিৎসক বলছেন, তার শরীরে লবণের ঘাটতি আছে। তাই তিনি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল আছেন বলেও ওই সময় জানিয়ে ছিলেন তিনি।
অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসান বলেন, বাবা কয়েক দিন আগে পড়ে যাওয়ায় তার পায়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে।
হাসান আজিজুল হক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে অধ্যাপনা করেন।
জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। ১৯৬০-এর দশকে তিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন।
১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ও ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।
সার্বজৈবনিক সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালে তাকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি দেওয়া হয়।