দেশে প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১৩ জন।
বুধবার (১১ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে ডেঙ্গু বিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২১৩ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে ১৮৮ জন আর ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়ে ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি ৯০৭ জন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি রোগী রয়েছেন ৮৪১ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে ভর্তি রোগী রয়েছেন ৬৬ জন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২২ জনের মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। আইইডিসিআর এখনও কোনো মৃত্যুর পর্যালোচনা সমাপ্ত করেনি এবং কোনো মৃত্যু ডেঙ্গু বলে নিশ্চিত করেনি।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার ১৯২ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ২৬৩ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ডেঙ্গু প্রকোপের এ সময়ে বাসাবাড়িতে অব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্রে পানি জমতে না দেওয়াসহ দিনে ও রাতে মশারি টানানোর পরামর্শ বিশেজ্ঞদের।
প্রতিবছর বর্ষাকালেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারান। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ:
১। প্রচণ্ড জ্বর
২। তীব্র মাথাব্যথা
৩। বমি
৪। শরীরে লাল র্যাশ ওঠা
৫। মাংসপেশীতে ব্যথা
৬। চোখের পেছনে ব্যথা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:
১। মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা।
২। ঘর ও আশপাশের যে কোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা যাতে এডিস মশার লাভা বিস্তার না করতে পারে।
৩। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারি সেল ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা; যাতে এডিস মশা বিস্তার না করতে পারে।
৪। রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।
৫। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্থাপন করা।
৬। মশা নিধনের ওষুধ, স্প্রে কিংবা কয়েল ব্যবহার করা।
৭। জানালাতে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার করা।