চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি তুলার গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে। একইসঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনীর ফায়ার ফাইটিং এর চার ইউনিটও।
শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ফায়ার ফাইটিং ইউনিট কাজ শুরু করে। রাত ১১টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে।
ঘটনাস্থলের আশেপাশে পানির পর্যাপ্ত উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ইউনিটেক্সের ২৭০০ টন তুলা গুদামে মজুদ ছিল। তুলা দাহ্য পদার্থ হওয়ায় আগুন নেভানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিট কাজ করছে। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ফায়ার ফাইটিং টিমকে দুর্ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ছোট কুমিরা নেমসন ডিপোর পাশে এস এল গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিটেক্স গ্রুপের ভাড়ায় নেয়া একটি তুলার গোডাউনে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। এ দুর্ঘটনায় এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
কুমিরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র ফায়ার স্টেশন অফিসার সুলতান মাহমুদ বলেন, তুলার মধ্যে আগুন ধরে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে পুরো গোডাউন আমরা ঘিরে ফেলেছি। আমাদের ১১টি ইউনিট কাজ করছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। এই আগুন পুরো নিভতে সময় লাগবে। সেটা একদিনও হতে পারে বা দুইদিনও হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে তুলার গোডাউনে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে সংস্কার করছিল শ্রমিকরা। হঠাৎ গ্যাস কাটিনের স্ফুলিঙ্গ তুলার মধ্যে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। পুরো গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে আগুনের ভয়াবহ দাবানল।
স্থানীয় যুবক রুবেল বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু তারা দেরিতে আসায় আগুনের তীব্রতা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা প্রশাসন জানায়, সপ্তাহখানেক ধরে এসএল গ্রুপের গোডাউনটিতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়েল্ডিংয়ের আগুনের স্ফূলিঙ্গ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিসি আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান।
এর আগে, গত শনিবার (৪ মার্চ) সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামে কারখানায় বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এ পর্যন্ত সাতজন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সোমবার রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়।
এমজে/