চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ইউনিটেক্সের তুলার গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিটের পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনীর ফায়ার ফাইটিং এর চার ইউনিটও। এ ঘটনায় ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
শনিবার (১১ মার্চ) রাত ১১টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে।
চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে জেলা পুলিশ সুপার, শিল্প পুলিশ সুপার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশন (বিটিএমসি), বিস্ফোরক পরিদফতর, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএম) একজন করে প্রতিনিধি এবং সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের আশেপাশে পানির পর্যাপ্ত উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তুলা দাহ্য পদার্থ হওয়ায় আগুন নেভানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিট কাজ করছে। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ফায়ার ফাইটিং টিমকে দুর্ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ছোট কুমিরা নেমসন ডিপোর পাশে এসএল গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিটেক্স গ্রুপের ভাড়ায় নেওয়া একটি তুলার গোডাউনে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। এ দুর্ঘটনায় এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
কুমিরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র ফায়ার স্টেশন অফিসার সুলতান মাহমুদ বলেন, তুলার মধ্যে আগুন ধরে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে পুরো গোডাউন আমরা ঘিরে ফেলেছি। আমাদের ১১টি ইউনিট কাজ করছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। এই আগুন পুরো নিভতে সময় লাগবে। সেটা একদিনও হতে পারে বা দুইদিনও হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে তুলার গোডাউনে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে সংস্কার করছিল শ্রমিকরা। হঠাৎ গ্যাস কাটিনের স্ফুলিঙ্গ তুলার মধ্যে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। পুরো গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে আগুনের ভয়াবহ দাবানল।
জেলা প্রশাসন জানায়, সপ্তাহখানেক ধরে এসএল গ্রুপের গোডাউনটিতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়েল্ডিংয়ের আগুনের স্ফূলিঙ্গ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিসি আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান।
এর আগে, গত শনিবার (৪ মার্চ) সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামে কারখানায় বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এ পর্যন্ত সাতজন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সোমবার রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়।
এমজে/