এক হাজার টাকার নতুন নোটের লোভে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা!

ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়ার (২৫) মানিব্যাগে এক হাজার টাকার ১০টি চকচকে নতুন নোট দেখে হঠাৎ লোভে পড়ে যায় বন্ধু সালাউদ্দিন ভূঁইয়া (৩৯)। সেই লোভ এবং পূর্বশত্রুতার জেরে পার্শ্ববর্তী যুবক আব্দুর রহমানকে (২২) সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় ফরিদ উদ্দিনকে।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোচিত ফরিদ উদ্দিন হত্যার ঘটনার এমনই নির্মম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন পুলিশের হাতে আটক দুই আসামি।

সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ।

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল রাতে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাড়িতে নিজ বসতঘর থেকে ফরিদ উদ্দিনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় তার বোনজামাই দুলাল চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় এবং হাজীগঞ্জ সার্কেল সোহেল মাহমুদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রুবেল ফরাজী ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেফতারে তৎপরতা চালান। এরপর প্রথমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামি আব্দুর রহমানকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মূল আসামি সালাউদ্দিনের নাম ঠিকানা বলে দেন।

তার দেয়া সাক্ষ্যে অনুযায়ী মূল আসামি মো. সালাউদ্দিনকে ফরিদগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আটক আসামিরা ঘটনা স্বীকার করে জানান, মৃত ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আসামি সালাউদ্দিন ভূঁইয়া একই সঙ্গে চলাফেরা করত। সালাউদ্দিন ভূঁইয়া পেশায় একজন ড্রাইভার। তার দুই স্ত্রীর মধ্যে একজন চট্টগ্রাম এবং অপরজন ফরিদগঞ্জে থাকেন। সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে মৃত ফরিদ উদ্দিনের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতো।

ঘটনার আগের রাতে ফরিদ উদ্দিন ও সালাউদ্দিন বাড়ির পাশের দোকানে আইপিএল খেলা দেখছিল। এ সময় সালাউদ্দিন ফরিদ উদ্দিনের মানিব্যাগে ১ হাজার টাকার ১০টি নতুন নোট দেখতে পায়। এই নতুন টাকা এবং পূর্বশত্রুতার জেরে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রহমানকে নিয়ে ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে সালাউদ্দিন।

ঘটনার রাতে তারা ফরিদের ঘরে ঢুকে দরজায় নক করে ধারালো দা নিয়ে ওতপেতে থাকে। ফরিদ উদ্দিন দরজা খুলতেই তারা ফরিদের ঘাড়ে ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয়। ফরিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা লাশ গুম করার জন্য তার শয়ন কক্ষে তোশকের ভিতরে পেঁচিয়ে রাখে। এরপর আসামিরা ফরিদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং ১০ হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে চলে যায়। বাইরে এসে সালাউদ্দিন তার সহযোগী আব্দুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকায় চলে যেতে বলে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img