ওয়াশিংটন-মস্কোর সঙ্গে ভারসাম্য রাখছে ঢাকা

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুই মেরুতে অবস্থান করছে ওয়াশিংটন-মস্কো। দুই বৈশ্বিক পরাশক্তি নিজ নিজ পক্ষে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছে।

এ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ উভয় পক্ষের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে চেষ্টা করছে।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের শীর্ষ ক্রেতাও যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা দেওয়ার কারণে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন ঐতিহাসিক।

আর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ প্রতিরক্ষা খাতেও সহায়তা দিয়ে আসছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কও বিস্তৃত। এখন ইউক্রেন পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে চায় বাংলাদেশ।
ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘে তিনবার ভোটাভুটি হয়েছে। প্রথমবার ভোটাভুটিতে অংশ না নিয়ে বিরত থেকেছিল বাংলাদেশ। সে সময় কোনো পক্ষেই ভোট দেয়নি বাংলাদেশ। দ্বিতীয়বার ভোটাভুটিতে ইউক্রেনে মানবিক সহায়তার পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ। সেই ভোট ইউক্রেনের পক্ষে যায়। আর তৃতীয় বার জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত নিয়ে ভোটাভুটি হলে সেখানে ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। তিনবারের ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ দুবার ভোটদানে বিরত থেকেছে। আর একবার ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এভাবে জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে সব দিক রক্ষা করে চলেছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘে দ্বিতীয়বারের ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের পক্ষে ভোটদানকে ‘মানবিক বিবেচনায় ভোট’ হিসেবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ। এ ভোট দেওয়া কোনো ধরনের চাপে পড়েও দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

এদিকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফর করেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই এ আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সে সময় ইউক্রেনের পরিস্থিতি ও জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে বাংলাদেশও অবস্থান স্পষ্ট করে। মস্কোর সঙ্গে ঢাকার যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, সেই আলোকেই ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে অবস্থান নিচ্ছে বাংলাদেশ। আর একইভাবে সেই আলোকে মস্কোর সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রেখেছে ঢাকা।

ইউক্রেন ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার অবস্থান ভিন্ন হলেও উভয়পক্ষ আগামী দিনে একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে আগামী ৫০ বছরে এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে উভয়পক্ষ।

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা আছে। কারোর চাওয়া অনুযায়ী সেই সম্পর্ক বদলে ফেলা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। বিশ্বের সব দেশের সঙ্গেই আমরা এক ধরনের যুক্ততা বজায় রাখতে আগ্রহী।

ইউআর/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img