কলম্বোর মন্থর উইকেটে রানের খড়ায় ভুগেন দুই দলের ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৩২ রানের পুঁজি পায় ভারত। তাতেই লড়াই জমল বেশ, ম্যাচ গড়ায় শেষ ওভারে। শ্বাসরুদ্ধ লড়াইয়ের শেষ ওভারে এসে ৪ উইকেট আর ২ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
১৩৩ রানের টার্গেটে নেমে দলীয় ১২ রানের মাথায় আভিষ্কা ফার্নান্ডোকে হারায় শ্রীলঙ্কা। এরপর কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তী আর রাহুল চাহার- এই স্পিনত্রয়ীর দাপটে রীতিমতো ঘামতে থাকে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হার না মানা ইনিংস ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ায়।
সেট হওয়ার পর ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন লঙ্কান ওপেনার মিনোদ ভানুকা। এরপর ১০৫ রান তুলতেই শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। তখন তাদের হাতে মাত্র ১৬ বল, রান দরকার ২৮। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় হারতে বসেছিল স্বাগতিকরা। তবে এক প্রান্তে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন ধনাঞ্জয় ডি সিলভা।
সতীর্থরা আসা যাওয়ার মিছিলে থাকলেও তিনি হাল ছাড়েনি। শেষ দুই ওভারে যখন প্রয়োজন ২০ রান, তখন ভুবনেশ্বর কুমারকে ছক্কায় ওড়ান চামিকা করুনারত্নে। ওই ওভার থেকে আসে ১২ রান। শেষ ৬ বলে ৮ রানের সমীকরণ মেলাতে সমস্যা হয়নি ধনাঞ্জয়ার। শেষ পর্যন্ত ৩৪ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ৪০ রানে অপরাজিত এই লঙ্কান।
এর আগে পাঁচ অভিষিক্ত দেবদত্ত পাডিক্কেল, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, নিতিশ রানা এবং চেতন সাকারিয়াকে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। অভিষেক ম্যাচেই শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন রুতুরাজ। শুরুটা তিনি ভালোই করেছিলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে বিনা উইকেটেই ৪৫ রান তুলে সফরকারিরা।
তবে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ২১ রান আউট হন রুতুরাজ। তারপরও ১২ ওভার শেষে ভারতের রান ছিল ১ উইকেটে ৮১। ধাওয়ান টিকে থাকলেও টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারছিলেন না। ৫ চারে ৪২ বলে ৪০ রান করে তিনি বোল্ড হন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে।
এরপর একটি করে ছক্কা-চারে ২৩ বলে ২৯ করা অভিষিক্ত দেবদূত পাডিক্কেলের স্টাম্প ভাঙেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। এছাড়া সঞ্জু স্যামসন (১৩ বলে ৭), নিতিশ রানাও (১২ বলে ৯) সুবিধা করতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৩২ রানে থামে ভারতীয় ইনিংস। এই পুঁজি নিয়েই কাঁপিয়ে দিয়েছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
মূলত ম্যাচটি মঙ্গলবার হওয়ার কথা থাকলেও ক্রুনাল পান্ডিয়া কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় তা একদিন পিছিয়ে যায়। তার ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসায় ভারত দলের আটজন ক্রিকেটারকে রাখা হয় আইসোলেশনে। তাই ভারতের মূল দলের কেবল ১১ জনই ছিল অবশিষ্ট। তাদের নিয়েই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করল সফরকারীরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৩২/৫ (রুতুরাজ ২১, ধাওয়ান ৪০, পাডিক্কেল ২৯, স্যামসন ৭, নিতিশ ৯, ভুবনেশ্বর ১৩*, সাইনি ১*; চামিরা ৪-০-২৩-১, চামিকা ১-০-৬-০, আকিলা ৪-০-২৯-২, উদানা ১-০-৭-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-৩০-১, শানাকা ২-০-১৪-১, রমেশ ২-০-৯-০, ধনাঞ্জয়া ২-০-১৩-০)।
শ্রীলঙ্কা: ১৯.৪ ওভারে ১৩৩/৬ (আভিশকা ১১, মিনোদ ৩৬, সামারাবিক্রমা ৮, শানাকা ৩, ধনাঞ্জয়া ৪০*, হাসারাঙ্গা ১৫, রমেশ ২, চামিকা ১২*; ভুবনেশ্বর ৪-০-২১-১, সাকারিয়া ৩.৪-০-৩৪-১, বরুণ ৪-০-১৮-১, চাহার ৪-০-২৭-১, কুলদিপ ৪-০-৩০-২)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ধনাঞ্জয়া ডি সলভা।