আগে মানুষের জীবন, পরে অর্থনীতি

নভেল করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি রোধে দেশব্যাপী সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ (লকডাউন) কঠোরভাবে পালনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের আগে মানুষের জীবন রক্ষা করতে হবে, পরে দেশের অর্থনীতি। মানুষকেই যদি বাঁচানো না যায়, সেক্ষেত্রে অর্থনীতি দিয়ে কী হবে? অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আগে মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে।

টিকাদান কর্মসূচি আরও জোরদার করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে টিকা দেওয়া ও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে নির্ধারিত এজেন্ডার বাইরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরাও করোনা নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেছি। পাশাপাশি করোনার টিকা আমদানির বিষয়টিও তুলে ধরেছি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো তুলে ধরে জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী টিকা কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশনা দিয়েছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে বয়স্ক লোকদের টিকার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। টিকা নেওয়ার বিষয়ে বয়স্কদের মধ্যে একটা অনীহা আছে। হাসপাতালে দেখা গেছে, গ্রামের বয়স্ক লোকরাই আছেন ৭৫ শতাংশ। তাদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি, আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ। তাদের সবাইকে টিকা দেওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ফ্রন্টলাইন কর্মী হিসেবে ডাক্তার-নার্স, আর্মি, পুলিশ, গণমাধ্যমের কর্মীরাও রয়েছেন। এদের মধ্যে যারা পেয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে বাকিদেরও দ্রুত টিকা দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তাদের পরিবারকেও টিকা দেওয়ার জন্য বলেছেন তিনি। তাদের পরিবারে যদি কোনো ড্রাইভার থাকে, তাকেও দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। পরিবারে ১৮ বছরের বেশি যাদের বয়স, তারা সবাই এ টিকা পাবে।

ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনার টিকা প্রদান ও পরীক্ষার ব্যবস্থা করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে জাহিদ মালেক জানান, বর্তমানে টিকা কার্যক্রম তো চলছেই। এখন আমরা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা পর্যায়ে বেশি জোর দেব। পাশাপাশি টেস্টের বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। গ্রামের লোকেরা অনেক সময় পরীক্ষা করতে চান না। তাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে, যদি করোনা পজিটিভ হয় তাহলে হয়তো গ্রামে তাঁকে থাকতে দেওয়া হবে না। এ ধরনের ভুল ধারণা থেকে অনেক বয়স্ক লোক করোনার পরীক্ষা করতে চান না।

মানুষকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউনের তিন-চার দিন চলছে। কিন্তু রাস্তাঘাটে মানুষ যেভাবে চলাফেরা করছে, যেভাবে গাড়ি চলাচল করছে তাতে আমরা খুবই দুঃখিত। যারা লকডাউন ব্রেক করছে, তারা নিজেদের ক্ষতি করছে। প্রতিটি রাষ্ট্রের সক্ষমতার একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমাদের হাসপাতালে ৯০ শতাংশ সিট বুক হয়ে গেছে। এখনো প্রচুর রোগী আসছে। নতুন করে আর কোথায় হাসপাতাল চালু করব? নতুন তো কোনো ভবনও নেই। ডাক্তার-নার্সরাও ক্লান্ত হয়ে গেছেন। তাঁরা আর কত কাজ করবেন? নতুন চার হাজার ডাক্তার নেওয়া হচ্ছে, নার্স নেওয়া হচ্ছে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img