সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করাই বিএনপির একমাত্র রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়াদুল কাদের।
সোমবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মিথ্যাচার’ দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির হাত ধরেই এদেশে ক্যু ও হত্যার রাজনীতি বৈধতা পেয়েছিল। করোনাকালে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে সকল রাজনৈতিক দল একযোগে মানুষ বাঁচানোর রাজনীতি করছে। এমনকি যেসব দেশে সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে তুমুল বৈরিতা ছিল, তা দূর করে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে যখন মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার জন্য প্রাণপণ কাজ করছে, ঠিক তখনই বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি প্রতিদিন ভ্রান্ত-মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েই যাচ্ছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য মানুষের কল্যাণ করা, কোনো প্রকার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী এবং জনরায়ের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল। বিএনপি নামক দলটি জন্মলগ্ন থেকে অবৈধভাবে শুধুমাত্র ক্ষমতা দখলই করেনি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নস্যাৎ করার মধ্য দিয়ে অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কায়েম করেছে। কারা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে চেয়েছিল তা দেশবাসী জানে। বিএনপির হাত ধরেই এদেশের ষড়যন্ত্র, ক্যু ও হত্যার রাজনীতি বৈধতা পায়। ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলের পক্ষেই সম্ভব। দলের শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতিকে রাজনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে দুর্নীতিবাজ দলে পরিণত হয়েছে। এমনকি তার জন্য নির্লজ্জভাবে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছে বিএনপি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সারাদেশে কোথাও রাজনৈতিকভাবে কোনো মামলা দায়ের বা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ। এই স্বাভাবিক কার্যক্রমকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢালাওভাবে রাজনৈতিক রং দিয়ে নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার করছেন। বরং এই রাজনৈতিক অপলাপের আড়ালে খুনি, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। আমরা দেখেছি, কীভাবে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। সেসব অপকর্মের ইতিহাস জনগণ ভুলে যায়নি বলেই বিএনপি বারবার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখাত হয়েছে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রম ও সুদক্ষ নেতৃত্বে সরকার একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, সরকারের কোনো ভালো কাজ কখনোই বিএনপি নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিগোচর হয় না। অতিমারির এই কঠিন পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ না করে- মানুষকে কোনো প্রকার সহায়তা প্রদান না করে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য বিবৃতির মাধ্যমে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে যাচ্ছে। নিজেদের আরামপ্রদ গৃহকোণে নিরাপত্তা বলয়ে অবস্থান করে মিডিয়াতে শুধু লিপ সার্ভিস দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করার পাঁয়তারা করছে।
বিবৃতিতে তিনি অতিমারির এই সময়ে বিএনপি নেতাদের প্রতি বিবেক দ্বারা পরিচালিত হয়ে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করে জনকল্যাণমুখী রাজনীতিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।