দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্থোপেডিক (হাড়ভাঙ্গা) প্রাথমিক চিকিসা সেবায় চকরিয়ার গরীবের চিকিৎসক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন ডা. শম্ভু দে। বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের জুন মাসে গরিবের এই চিকিসক কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্ন আয়ের ও হত দরিদ্রদের মাঝে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল ২৩ জুন, বুধবার সকাল থেকে প্রায় তিন শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বিনামূল্যে এই চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম আয়োজন করেন ডা.শম্ভু দে পরিবার।
চকরিয়া পৌরশহরের চিরিংগা ওসান সিটি মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা কর্মসূচী উদ্বোধন করেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কান্তি দাশ।
ওইদিন রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন, চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (অর্থোপেডিক সার্জারী) ডা. সুজন ত্রিপুরা।
এসময় চকরিয়া পৌরসভা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাসানগীর ও চকরিয়া সার্বজনীন কেন্দ্রীয় হরিমন্দির উন্নয়ন কমিটির সদস্য সৌরভ দাশ গণেশসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রয়াত ডা. শম্ভু দে গরীবের ডাক্তার নামেই ছিল যার পরিচয়, তিনি মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত গরীব অসহায় মানুষের পাশে থেকে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবার ব্রতে কাজ করে গেছেন। যার স্বপ্নই ছিল জনপদের গরিব, অসহায় মানুষকে নিয়ে। সেবার জগতে প্রচার বিমুখ ছিলেন এই মানুষটি। তিনি বড় বড় হাড়ভাঙ্গা রোগী ভালো করলেও কখনো গণমাধ্যমে তার কাজগুলো প্রচার করার চেষ্টা করেননি।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের আবুধাবী (ইউ.এ.ই) শাখার আহবায়ক রঞ্জন দাশ ও সদস্য সচিব উজ্জ্বল দে (শিমুল) জানান, অবসর সময়ে তার কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মানুষগুলোর কাছে কোনো ধরনের চিকিসা ফি (ভিজিট) নেননি তিনি। কাউকে বাধ্যও করেননি ভিজিট দিতে। সব সময় গরীব অসহায়দের সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়ে যান। তিনি চকরিয়া জনপদের গণ্ডি পেরিয়ে জেলা জুড়ে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন।
তারা আরও বলেন, শুধু চকরিয়ায় না, জেলার বাইরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝেও চিকিৎসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধীদের কোনো প্রকার চিকিৎসা ফি ছাড়াই চিকিৎসা দিয়ে থাকতেন তিনি। কোনো কোনো সময় তাদের ঔষুধপত্র, যখন যা লাগে, সবকিছু দিয়েও সাহায্য করে গেছেন। অকালে গরীবের এই চিকিৎসক হারিয়ে হতদরিদ্র মানুষরা সেবা বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আজ বড়ই অসহায়।
এন-কে