জনগণের খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকারের এসেছে মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে কাজ করে গেছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে।
“আমরা ছিয়ানব্বই সালে যখন ক্ষমতায় আসি আটানব্বই সালে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। দ্বিতীয়বার যখন সরকারের আসি তখনও আমাদের লক্ষ্য পূরণ করি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে পুষ্টিটা যাতে যোগ হয় সেই পদক্ষেপ আমরা নিই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ছিয়ানব্বই সাল থেকে এ পর্যন্ত যখনই ক্ষমতায় আসি আমরা আমাদের যুবকদের ট্রেনিং দেয়া, সুযোগ সৃষ্টি করা, জলাধারগুলো সংস্কার করা, মাছ উৎপাদন যাতে বৃদ্ধি হয় সেই ব্যবস্থা করি। একইসাথে গবেষণা করে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা, কৃত্রিম প্রজণনের ব্যবস্থা করা; যাতে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।”
খাদ্য তালিকায় সবচেয়ে নিরাপদ পুষ্টি মাছই দেয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “একজন মানুষ যদি ৬০ গ্রাম মাছ খেতে পারে তাহলে তার জন্য সেটি যথেষ্ট। সেই সুযোগটা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে সাথে আমরা ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছি।
“আমি বলব যেকোনো তরুণ লেখাপড়া শিখে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই যদি মৎস্য খামার করে, মাছ উৎপাদন করে এবং সেটা যদি বিক্রি করে তাহলে ভালো পয়সা পেতে পারে।”
সারা দেশে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এসব অঞ্চলে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলায়। সেখানে মাছ এবং মৎস্যজাত যেকোনো পণ্য প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাত করতে পারে। সেই সুযোগটিও সৃষ্টি হচ্ছে।”
সরকার যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখান থেকে তারা জামানত ছাড়া ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারে।
নদ-নদী, জলাধার সংরক্ষণে সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে যাতে আরো বেশি মাছ উৎপাদন হয় সেই ব্যবস্থা করছি। মাছের উৎপাদন আগে যেখানে ২৭ লক্ষ মেট্রিক টন ছিল, সেখানে এখন প্রায় ৫০ লক্ষ মেট্রিক টনের কাছাকাছি উৎপাদন শুরু হয়েছে। ইলিশ উৎপাদনে আমরা বিশ্বের এক নম্বর দেশ।”
খাদ্য নিরাপত্তার পর পুষ্টির নিরাপত্তা বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কারণে এখন মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে না উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, খাদ্য তালিকায় শুধু ভাত নয়, শাকসবজি, মাছ ফলমূল নিতে হবে, যাতে পুষ্টিগুণ থাকে।
সংগঠনকে আরো সংগঠিত করা এবং যুব সমাজ যাতে মৎস্য উৎপাদনে উৎসাহিত হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচি নিতে মৎস্যজীবী লীগের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
দেশে মৎস্যখাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তা কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।