ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক শুনানি শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজেতে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) টানা ছয় দিন শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে ৫২টি দেশ, যেখানে আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বক্তব্য উপস্থাপন করবে বাংলাদেশ।
১৯৪৭ থেকে ফিলিস্তিনি ভুখন্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের শুরু, যা এখনও চলছেই। স্বাধীনতাকামী হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজাও রক্ষা পায়নি। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় তা পরিণত ধ্বংসস্তুপে। পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমেও অব্যাহত ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব আর ধরপাকড়।
আন্তর্জাতিক আইন ও বিশ্বেনেতাদের বারণ কোনকিছুরই তোয়াক্কা করছেনা ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনে দখলদারিত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক শুনানি। এতে অবিলম্বে অবৈধ ইসরায়েলি দখলদারিত্ব বন্ধের দাবি ফিলিস্তিনের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো যত দ্রুত সম্ভব অবৈধ ইসরায়েলি দখল বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের মতো করে বাঁচার অধিকার আছে। গাজায় বর্তমানে যে গণহত্যা চলছে তা আন্তর্জাতিক মহলের দীর্ঘদিনের নীরবতার ফসল।
১৯৬৭ সালে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। মৌখিকভাবে তাতে রাজি হলেও বাস্তবে নিয়মিতই সীমানা লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল অভিযোগ ফিলিস্তিনের আইনজীবীদের। এই দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করতে আদালতের কাছে আর্জি জানান তারা।
ফিলিস্তিনের আইনজীবী পল রেইচলার বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সমস্যার অন্যতম সমাধান হতে পারে এই অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধ করা। তাই আদালতের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করা হোক।
নেদারল্যান্ডসের হেগে চলা শুনানিতে অংশ নিচ্ছে ৫২ দেশ ও তিনটি প্রতিষ্ঠান। যা চলবে ২৬শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আটদিন ধরে চলা শুনানিতে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে দেশগুলো। আজ বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তি উপস্থাপন করবে সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে। শহরটির সবচেয়ে সংবেদনশীল পবিত্র স্থানগুলোর আবাসস্থল পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের অধিগ্রহণ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
২০০৪ সালে আইসিজে বলেছিলেন, পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরের কিছু অংশে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। এটি অবিলম্বে নির্মাণ বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানালেও দেশটি এ রায় উপেক্ষা করে চলেছে।
এমজে/