রাখাইনে চলমান সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য ওপারে সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে অনেক রোহিঙ্গা। তবে তাদের এদেশে আসার ব্যাপারে বিরোধিতা করছে উখিয়া-টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা। তারা বলছেন, নিজ দেশ ছেড়ে এবার ভুল করা যাবে না।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পে আয়োজিত কনভেনশনে রোহিঙ্গা নেতারা বলেছেন, আরাকান আর্মি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে এখনই তারা ফিরে যাবেন মিয়ানমারে।
দেশটির অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল সংঘর্ষ চলছে। ইতোমধ্যে রাখাইন রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা দখলে নিয়েছে সংগঠনটি। ফলে বুচিডংসহ রাখাইনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে।
এদিন উখিয়া ক্যাম্পের কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, দুই পক্ষের হামলায় রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই তারা বাংলাদেশে চলে আসার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছেন এখানকার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে।
তবে এবার নিপীড়নের শিকার হলেও কোনো অবস্থাতেই জন্মভূমি না ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। তারা বলছেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসে ভুল করেছেন। সেটা দ্বিতীয়বার যেন অন্যরা না করেন। মিয়ানমারে এখন জান্তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে এখনই স্বদেশে ফিরে যাওয়া জরুরি।
এক রোহিঙ্গা বলেন, আমরা আর কাউকে বাংলাদেশে আসতে দিতে চায় না। বরং এখনই সময় সেখানে আমাদের চলে যাওয়া। যেটা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে যেতে পারলে খুবই ভালো হয়। সেই সুরে সুর মিলিয়ে আরেক রোহিঙ্গা বলেন, তারা কষ্ট পেলেও, জুলুমের শিকার হলেও মিয়ানমারেই থাকা দরকার তাদের। ওরা থাকতে পারলে পরে আমরাও যেতে পারবো।
মিয়ানমারে দ্রুত ফিরে যাওয়ার জন্য এদিন সকালে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে সম্মেলন করেন এফডিএমএন রিপ্রেজেন্টেটিভ কমিটি। এতে নির্বাচিত বিভিন্ন ক্যাম্পের ৪ হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। আরাকান আর্মিকে ইঙ্গিত করে কমিটির নেতা মাস্টার ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, সংগঠনটি রোহিঙ্গাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে তারা এখনই চলে যেতে প্রস্তুত।
শরণার্থী কমিশন বলছে, নতুন করে যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসান কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
অনুপ্রবেশের পাশাপাশি ওপার থেকে নিয়মিত ভেসে আসছে ভারী অস্ত্রের ঝনঝনানি। এর ফলে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্তে আতঙ্কে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এমজে/