রূপনগরে কৃষকলীগ নেতা পরিচয়ে শাখাওয়াতের চাঁদাবাজি! (পর্ব-১)

খোদ রাজধানী ঢাকা শহরেই কৃষক না হয়েও কৃষকলীগের কথিত নেতা দাবী করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো রূপনগর।

নানা অপকর্মের দায়ে প্রবাস ফেরত শাখাওয়াত হোসেন এখন নিজেই এলাকায় রূপনগর থানার সোর্স পরিচয়ে একের পর এক হয়রানী করে যাচ্ছে। আর তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে রূপনগর থানার সাব ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন।

মিরপুর আরিফাবাদ হাউজিং সোসাইটিতে বিভিন্ন ভাড়াটিয়া ও মালিকদের নানা কারণে প্রতিনিয়ত চাঁদার দাবিতে হুমকি দিয়ে আসছে কৃষক লীগের পরিচয় দানকারী এই কথিত নেতা। কখনো মালিক কল্যাণ সমিতি কিংবা কখনো মসজিদ কমিটির নামে চিঠি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চাঁদা আদায় এবং দাবী করে আসছে বলে অভিযোগ এসেছে এই প্রতিবেদকের কাছে।

অভিযোগে জানা যায়, আরিফাবাদ আবাসিক এলাকার আই-৩-৪ বাড়ীর তিনটি ফ্ল্যাটের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সাথে সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে। শাখাওয়াতের প্রতারণা থেকে রেহাই পায় নি খোদ মসজিদও। আরিফাবাদ মালিক কল্যাণ সমিতির প্যাডে মসজিদ নির্মানের জন্য ফ্ল্যাট প্রতি ৫০ হাজার টাকা করে মোট দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে শাখাওয়াত হোসেন লিখিত চিঠি পাঠিয়ে ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছেন। মালিক কল্যাণ সমিতির সাথে উক্ত চিঠির ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তারা এমন চিঠি তাদের তরফ থেকে পাঠানো হয়নি বলে দাবী করেন। তবে, এই বিষয়ে শাখাওয়াত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে চিঠিটি তার নিজের লেখা বলে স্বীকার করেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকী দেন।

এদিকে ক্রমাগত চাঁদার দাবীতে অতিষ্ঠ হয়ে চাদা দিতে অস্বীকার করায় শাখাওয়াত হোসেন ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে দুই মাস ধরে ভাড়া আদায় করে মালিক পক্ষকে না দিয়ে নিজেই হাতিয়ে নিয়েছেন। ভাড়া নিতে কিংবা ফ্ল্যাট কেনাবেচার জন্য আগ্রহীদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছেন তিনি। এ ব্যাপারে মালিক পক্ষকে ফোনে হুমকি দিয়েছেন বেশ কয়েকবার। চাঁদা না দিলে রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে দলীয় লোকজনের মাধ্যমে ফ্ল্যাট দখল এবং তার সাথে সু-সম্পর্ক রয়েছে এমন পুলিশের সাহায্যে মিথ্যা মামলা ও হয়রানীর হুমকী দিয়ে যাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, বিভিন্ন সময়ে ভবনের মেরামত, পেইন্ট, লিফট রক্ষণাবেক্ষণের নামে মিথ্যা কথা বলে ভাড়ার টাকা থেকে কর্তন করেছেন শাখওয়াত হোসেন, পরবর্তীতে যেটা ধরা পড়েছে। ভবনের ছাদের অংশের পুরোটা জুড়ে ঘর বানিয়ে দখল করে রেখেছেন। নীচতলায় নিজ অফিস বানিয়ে সেটাও একাই ভোগ দখল করে আসছেন শাখাওয়াত। কার পার্কিংয়ের স্থানে সিএনজি রেখে ভবনের বাইরের লোকদের কাছে গ্যারেজ হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন৷

ছাদের রুমে মদ্যপান সহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে ভবনের দুইজন ভাড়াটিয়া গত বছরের নভেম্বর মাসে বাসা ছেড়ে চলে গেছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। শাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার মেরিনা স্বামীর এ ধরণের অনৈতিক কর্মকান্ডের সহযোগিতা করে আসছেন বলে জানা যায়।

আরিফাবাদ হাউজিং সোসাইটি, রূপনগর, মিরপুর ঢাকা ১২১৬ ঠিকানার আই ৩-৪ প্লটের উপর নির্মিত “রূপ গার্ডেন” ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের নকশা ও অনুমোদন যথাযথভাবে মানা হয়নি। শুধু তাই নয়, অনুমতি ছাড়া বর্ধিত করা হয়েছে অতিরিক্ত ফ্লোর। যার ফলে ভবনটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে ভবনে বসবাসরত ভাড়াটিয়া ও অন্যান্য ফ্ল্যাট মালিকগণ শাখাওয়াত হোসেনকে একাধিকবার মৌখিকভাবে বললেও কোন সুরাহা হয় নি।

এ বিষয়ে শাখাওয়াত হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন। তিনি  প্রতিবেদককে সরাসরি এসে কথা বলার জন্য বলেন, একই সাথে উনার সাথে বড় বড় সাংবাদিকদের পরিচয় আছে বলেও জানান।

আরো অনুসন্ধান করে শাখাওয়াত হোসেনের অপকর্ম নিয়ে বিস্তারিত থাকছে আগামী পর্বে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img