আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি, মিলিটারির পকেট থেকে যাদের জন্ম, তারা না-কি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে।
সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ওই সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে থাকাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এর কোনো প্রতিশোধ নেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নালিশ করে বেড়ায় আওয়ামী লীগ নাকি অত্যাচার করছে। আওয়ামী লীগ অত্যাচার করেনি, অত্যাচার করেছে বিএনপি জামাত জোট। দেশের ভেতরেই না বাইরে গিয়েও নালিশ করা, কান্না করা বিএনপির চরিত্র। তারা মনে করেন বাইরে থেকে কেউ এসে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি মিছিল মিটিং করছে। কিন্তু তাদের আমলে আওয়ামী লীগকে মাঠেই নামতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
একাত্তরে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে অর্জিত স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুরু করা ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই এসেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫৩ বছর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ১৯৪৮ সালে আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সেই আন্দোলনের পথ বেয়েই তিনি ধীরে ধীরে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন। তারই ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে এদেশ স্বাধীন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল— এদেশের মানুষ যেন অন্ন পায়, বস্ত্র পায়, বাসস্থান পায়, চিকিৎসা পায়, উন্নত জীবন পায়। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়েই তিনি আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদেরকে একটি রাষ্ট্র দিয়েছেন, একটি জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন, বিশ্ব দরবারে আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি তার নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের জন্য। তিনি চেয়েছিলেন তাদের ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করবেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন। আর এসব কারণেই তিনি এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের যুদ্ধটা জনযুদ্ধ ছিল। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও মাঠে নেমে গিয়েছিল। যে যেভাবে পেরেছে, পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এ দেশের মা বোনেরা গেরিলা যোদ্ধাদের রান্না করে খাবারদাবারের ব্যবস্থা করেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। কাজেই একটা জনযুদ্ধের মধ্যে দিয়েই আমারা এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করি।
এমজে/