করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে টিকা রপ্তানি করে আসছিল। কিন্তু ভারতে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় চুক্তির নির্ধারিত সময়ের আগেই টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এতে বিপাকে পড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেরামের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবতে বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
রোববার (০৯ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়।
করোনা সংক্রমণের প্রথম ডোজ যাদেরকে দেওয়া হয়েছে এখন দ্বিতীয় ডোজ তাদেরকে দিতে হবে। কিন্তু সেরাম টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে দেশের ১৪ লাখের বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ফারুক খান বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বের যেসব দেশে টিকা রপ্তানি করে আসছিল অধিকাংশ দেশেই নির্ধারিত সময়ে টিকা সরবরাহ করতে পারেনি। এজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন মত দিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করবে। আমাদেরও চিন্তা করা উচিত, যেহেতু আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যথাসময়ে সরবরাহ করেনি, আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব কি না।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকা শুধু সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপর ভরসা না রেখে বিভিন্ন র্সোস থেকে টিকা আনার চেষ্টা চালাতে বলেছিল। সেটি কেন করা হয়নি, কমিটি তা জানতে চেয়েছে। তখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিভিন্ন কারণে তা হয়নি।
ফারুক খান বলেন, প্রথম ডোজে যারা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজেও তাদের একই টিকা পাওয়া নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা ওই কোম্পানির টিকা আনার উদ্যোগ দ্রুত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বৈঠক থেকে।
বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত থেকে টিকা পেতে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। চীনের টিকার জন্যও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বলেছে কমিটি। বৈঠকে কোভিড-১৯–এর বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ রাখার সুপারিশ করে কমিটি।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আবদুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত এবং কাজী নাবিল আহমেদ বৈঠকে অংশ নেন।