বাকি কেন্দ্রেও অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত কমিটি

গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের তদন্তেও অনিয়ম পেয়েছে কমিটি। এ ধাপে ৯৪টি ভোটকেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে এ অনিয়ম ধরা পড়েছে। এতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার চিত্রও দেখতে পেয়েছেন কমিটির সদস্যরা। ওইসব ঘটনা উল্লেখ করে সোমবার কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

এর আগে ২৭ অক্টোবর প্রধম ধাপের ৫১ কেন্দ্রের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল এ কমিটি। ওই প্রতিবেদনেও ভোটকক্ষে অরাজক পরিস্থিতি ছিল উল্লেখ করা হয়। ওই অনিয়মের ঘটনায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ছাড়াও স্থানীয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার গাফিলতি পাওয়া যায়। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দ্বিতীয় ধাপের তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেদন নিয়ে আমরা কোনো আলোচনা করিনি। দুয়েক দিনের মধ্যে এটা নিয়ে বসব। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে এ বিষয়ে জানাতে পারব। দুটো রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কী ব্যবস্থা ও কীভাবে নেওয়া হবে-এ বিষয়ে এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। আলোচনা না করে এ বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে শাস্তি দৃষ্টান্তমূলক হবে।

গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে ১২ অক্টোবর ভোটগ্রহণ হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ও তিনজন নির্বাচন কমিশনার সিসি ক্যামেরায় ওই নির্বাচনের অনিয়ম দেখতে পেয়ে প্রথমে ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন। দুপুর আড়াইটায় পুরো নির্বাচনই বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রথম ধাপে ৫১টি কেন্দ্রের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী বাকি ৯৪টি কেন্দ্রের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১৪৫টি।

ইসি সূত্র জানায়, ওই নির্বাচনে সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ছিল। ভোটগ্রহণের পুরো ফুটেজ ইসির কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভোটগ্রহণের অনিয়মের বিষয়ে কেন্দ্রভিত্তিক পর্যবেক্ষণ দিয়েছে দ্বিতীয় ধাপের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার বাড়ানোর সুপারিশও করা হয়েছে।

রংপুর সিটি নির্বাচন গাইবান্ধার মতো চাই না : রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা রংপুরে গাইবান্ধার মতো নির্বাচন চাই না। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কখনই নির্বাচন কমিশন এ ধরনের নির্বাচন চায় না। আর এজন্য প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা লাগবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা অসম্ভব ব্যাপার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠ প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করবে না-এই ধরনের কিছু মনে হচ্ছে না। নির্বাচন ধারাবাহিকভাবে চলছে। মাঠ প্রশাসন ভালোই রেসপন্স করছে।

ইভিএমে ম্যানুপুলেট করার সুযোগ নেই-ইসি আলমগীর : নিজ কার্যালয়ে রোববার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) চিপস এমনভাবে তৈরি যে এটা ওয়ানটাইন ইউজেবল। এখানে রিরাইট করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া ইভিএমে প্রোগ্রামিং পরিবর্তন করারও কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, অনেকেই বলেন যে এটা একটা কারচুপির মেশিন। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অতীতের নির্বাচনের যে অভিজ্ঞতা নিয়েছি, তাতে দেখেছি যে ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। যারা এক্সপার্ট তারাই সেটা বলেছেন। দলগুলোকেও ডেকেছিলাম তাদের কারিগরি টিম এনে পরীক্ষা করে দেখার জন্য। তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রথমেই যেটা বলা যে প্রোগ্রামিং করে ফল উলটে দেওয়া যায়। তাত্ত্বিক দিক দিয়ে যারা বলেন, তারা হয়তো ঠিকই বলেন, কিন্তু বাস্তবতার দিক দিয়ে এটা মোটেই ঠিক নয়।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img