কিশোরগঞ্জে দুই জনকে হত্যার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ছেলের সামনে বাবাকে ও করিমগঞ্জে ছেলের বিরুদ্ধে বাবাকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (০৫ নভেম্বর) সকালে কটিয়াদীতে ও শুক্রবারে রাতে করিমগঞ্জে এ দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন কটিয়াদী সদরের পশ্চিমপাড়া নদীরচর মহল্লার মোতালিব মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩৩) ও করিমগঞ্জের হাত্রাপাড়া গ্রামের মৃত কাজিমুদ্দিনের ছেলে এনামুল হক রেনু (৪০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে বাবুল মিয়ার ঘরের সিঁধ কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘর থেকে তার মোবাইল ফোন ও বিদেশ যাওয়ার জমানো টাকা চুরি হয়। বাবুল মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ (১০) চুরির সময় চোরদের দেখে ফেলে। সকালে বিষয়টি বাবাকে জানায়। চোরদের সঙ্গে প্রতিবেশী নূরে আলমও ছিল। ঘটনাটি এলাকার কাউন্সিলরসহ স্থানীয় লোকদের জানানো হয়। এসব শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে নূরে আলম ছুরি নিয়ে বাবুলকে খুঁজতে থাকেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির কাছে দোকানে বাবুলকে দেখতে পান নূরে আলম। এ সময় ছেলে আব্দুল্লাহ তার সঙ্গে ছিল। লোকজনের সামনে কথা না বলে বাবুলকে ২০-২৫ গজ দূরে ডেকে নিয়ে যান নূরে আলম। সেখানে চুরির অপবাদ দেওয়ায় হাতে থাকা ছুরি দিয়ে বাবুলের গলায় আঘাত করেন। এতে গুরুতর আহত হন। ছেলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে বাবুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নূরে আলমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার ও কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওসি জানান, নূরে আলমকে আটক করেছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, করিমগঞ্জে ইজবাইক কিনে না দেওয়ায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে বিজয়ের (১৯) বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের হাত্রাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রেনু হাত্রাপাড়া গ্রামের মৃত কাজিম উদ্দিনের ছেলে।

নিহতের মা মর্তুজা বেগম জানান, রেনুর ছেলে বিজয় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে বাবার কাছে ইজিবাইক কিনে দেওয়ার জন্য আড়াই লাখ টাকা চায়। বাবা ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর বিজয় বাবাকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। শনিবার সকাল ৭টার দিকে মর্তুজা বেগম ছেলেকে ডাক দিতে গেলে ঘরের মঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।

জানা গেছে, নিহত রেনু বেশ কয়েকটি বিয়ে করলেও তার সঙ্গে কেউ থাকেন না। তিনি একাই বাড়িতে থাকতেন। তার এলোমেলো জীবনযাপনের কারণে পরিবারের লোকজন বিরক্ত ছিল। রেনুর প্রথম স্ত্রীর ছেলে বিজয় পাশের সতেরদরিয়া গ্রামে ফায়জুল হকের মুরগির খামারে কাজ করতো। রেনুর স্বজনদের অভিযোগ, ছেলে বিজয় দলবল নিয়ে তার বাবাকে হত্যা করেছে।

খবর পেয়ে করিমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখারুজ্জামান, ওসি শামসুল আলম সিদ্দিকী ও ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রেনুর মাথায় ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি আঘাত ছাড়াও পুরো শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুরো ঘরে ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিজয়কে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই মোজাম্মেল হক রোকন বাদী হয়ে থানায় মামলা করবেন।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img