দেশের ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা যাতে আচরণবিধি ভঙ্গ না করে সে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকে বার্তা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলের কোনো সদস্য যাতে আচরণবিধি না ভাঙে সে জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আলমগীর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
গাইবান্ধা জেলা পরিষদ নির্বাচন ও গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অভিযোগ জানান।
তারপর জেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ডিসি-এসপিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেয় ইসি। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তারা। এরপর মো. আলমগীর এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কাছে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে আপনাদের দলের কোনো সদস্য যাতে আচরণবিধি না ভাঙে সে জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।
নির্বাচন কমিশন পাঠিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, ‘জ্বী, জ্বী।’
ক্ষমতাসীন দলের সেক্রেটারি বরাবর কি না- জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, ‘নামটা বললাম না। তবে অলরেডি দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।কিছুক্ষণ পরে আপনারা টের পেয়ে যাবেন তারা সতর্ক হয়ে গেছে।’
ভোটার এবং প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানান এই কমিশনার। তিনি বলেন, ‘সরকার তো দেশ চালায়। তারা আরও মানতে বাধ্য৷আমরা যেটা বলব সেটা তো তারা সাংবিধানিকভাবে মানতে বাধ্য। সরকারি দায়িত্ব হিসেবে এটা মানতে হবে।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘৬১টি জেলার দুই-চারটা জেলা থেকে অভিযোগ আসছে। বাকি জেলাগুলো থেকে অভিযোগ আসে নাই৷হয়ও নাই। আপনাদের মিডিয়া থেকে আমরা পাই নাই। তার মানে কথাগুলো অবশ্যই শুনছে। সব সংসদ সদস্য তো করছেন না, হয়ত দুই-একজন করছেন।’
সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা কড়া নির্দেশ দিয়েছি যদি কেউ আচরণবিধি ভঙ্গ করে তাদেরকে বলতে হবে আপনারা অতিসত্বর এলাকা ত্যাগ করবেন। এলাকায় থাকতে পারবেন না। এই ভোটে তো তিনি ভোটার না। সে হিসেবে এলাকায় থাকার সুযোগ নাই।’
তিনি বলেন, ‘শুধু গাইবান্ধা না যেকোনো ধরনের নির্বাচন থেকে আমরা এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে থাকি যে যারা নির্বাচনের প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, বিশেষ করে অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা আছেন। তারপরে যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যিনি থাকবেন তাকে ভয়ভীতি দেখানো এ ধরনের অভিযোগ করে থাকেন।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘সে ব্যাপারে আমাদের কড়া নির্দেশ আমরা লিখিতভাবে দিয়েছি। এ ছাড়া আপনারা জানেন যে আগামী শনিবার এ উপলক্ষ্যে আমরা প্রত্যেক জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে আহ্বান করেছি আসার জন্য। সেই সময় আমাদের যে মেসেজটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু-সুন্দর করার জন্য সেটি দেওয়া হবে একেবারে সামনাসামনি।’
ইউআর/