মালয়েশিয়ার রাজার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। দুর্নীতির দায়ে ১২ বছরের জন্য কারাগারে যাওয়ার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মাথায় এই ক্ষমা চাইলেন তিনি। সোমবার দেশটির স্পিকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
২০২০ সালের জুলাইয়ে ওয়ানএমডিবি-র তহবিল কেলেঙ্কারির প্রথম মামলায় নাজিব রাজাককে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি। দীর্ঘ শুনানির পর গত ২৩ আগস্ট আগের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান শীর্ষ আদালত। সে অনুযায়ী তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মালয়েশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, এক বছরের বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত যে কোনও আইনপ্রণেতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার এমপি পদ হারাবেন, যদি না তারা ১৪ দিনের মধ্যে রাজার কাছে ক্ষমার আবেদন করেন।
স্পিকার আজহার আজিজান হারুন সোমবার বলেছেন, শুক্রবার করা ক্ষমার আবেদনের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত নাজিব আইপ্রণেতা হিসেবে বহাল থাকবেন। তবে ওই আবেদন খারিজ হলে তার এমপি পদ বাতিল হয়ে যাবে।
নাজিবের একজন আইনজীবীও তার রাজকীয় ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় নতুন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি) তহবিল গঠন করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৫ সালে ব্যাংক ও শেয়ারহোল্ডারদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে এই তহবিলের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠে। অভিযোগ উঠে, এই তহবিল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব অর্থ বিলাসবহুল বাড়ি, বিমান, দামি চিত্রকর্ম কেনাসহ নানা বিলাসী কর্মকাণ্ডে ব্যয় করা হয়েছে।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নাজিব রাজাক ও তার জোটের ঐতিহাসিক পরাজয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রাখে ওয়ানএমবিডি আর্থিক কেলেঙ্কারি। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন দেশটির আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে নাজিবের বিরুদ্ধে প্রতারণার তিনটি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি অভিযোগ আনা হয়। সব মিলে তার বিরুদ্ধে মোট ৪২টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর বেশিরভাগই ওয়ানএমবিডি তহবিল সংক্রান্ত।
ইউআর/