তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিড বুধবার রাষ্ট্রদূত ও কনসাল-জেনারেলদের পুনর্বহাল করাসহ দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে লাপিড বলেন, তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা ইসরাইলের নাগরিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবর বলেও জানান তিনি।
এর আগে এরদোগান আঙ্কারায় রাষ্ট্রদূতদের এক সমাবেশে বলেছিলেন, ইসরাইলের সঙ্গে পুরোমাত্রায় সম্পর্ক পুনরায় শুরু করা ‘আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের সাহায্য করার অনুমতি দেবে’।
ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক অ্যালন উশপিজ এবং তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেদাত ওনাল মঙ্গলবার একটি ফোন কলে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্কে ফিরে আসার চুক্তি চূড়ান্ত করেছেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, তুরস্ক ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক বহু পুরনো। উসমানিয়া খেলাফত বা অটোমান সাম্রাজ্যের শাসক সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ ইহুদি উদ্বাস্তু বা শরণার্থীদরকে মধ্যপ্রাচ্যে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তার উদ্যোগ অত্যন্ত কঠিন সময়ে ইহুদিদেরকে টিকে থাকতে সহায়তা করেছিল। এ কারণে ইহুদিরা অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতি অত্যন্ত অনুগত ছিল। ইহুদি নেতা থিওডর হার্জল অটোমান সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদকে অনুরোধ করেছিলেন ফিলিস্তিন দখল করে ইহুদিদেরকে দেওয়ার জন্য। যদিও পরবর্তীতে ইহুদিদের নানা কর্মকাণ্ডে অটোমান সুলতানরা ইহুদিদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন।
অবশ্য ইসরাইল-তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতিপথ বহুবার পাল্টেছে। শুরু থেকে দুই দেশের সম্পর্কে তিক্ততা, ক্ষোভ ও অবিশ্বাস ছিল। এসবের পরও দুই দেশ সম্পর্কের এক গভীর টান অনুভব করে। এর মূলে রয়েছে কূটনীতি ও বাণিজ্য। ইসরাইল বা তুরস্ক কেউ চায় না একে অন্যকে কখনো হাতছাড়া করতে। বিভিন্ন সময়ে একে অন্যের মান-অভিমান ভাঙাতে এগিয়ে এসেছে। বৈরী, কিন্তু বৈরী নয়–এমন এক অবস্থায় থেকে দুই দেশ কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে সবসময় তৈরি ছিল এবং আছে বলেই দুই দেশের সম্পর্কের বারবার উত্থান-পতন ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইউআর/