মস্কো ও কিয়েভের মধ্য খাদ্যশস্য রপ্তানি নিয়ে চুক্তির পর ইউক্রেনের প্রথম শস্যবোঝাই জাহাজটি বন্দর ছাড়ছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক। ইউক্রেনের বন্দর থেকে ছেড়ে আসা প্রত্যেকটি জাহাজে তল্লাশি চালান হবে বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। বার্তা সংস্থা এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
লাভরভ বলেন, ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্য নিতে আসা যেকোনো জাহাজ যেন ‘কোনো অস্ত্র না আনে তা নিশ্চিত করার জন্য পরিদর্শন করা হবে’।
কায়রোতে আরব লিগের সম্মেলেন দেওয়া এক ভাষণে লাভরভ অস্ত্র বহনকারী যেকোনো জাহাজের ব্যাপারে হুশিয়ারি দেন।
মিশর বিশ্বের শীর্ষ গম আমদানিকারকদের মধ্যে একটি। গত বছর দেশটি মোট আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশ গম কিনেছে রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে।
গত শুক্রবার তুরস্কের ইস্তানবুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে খাদ্যশস্য চুক্তি হয়। এর মাধ্যমে ইউক্রেনের বন্দরগুলোতে আটকে থাকা শস্য বিশ্ববাজারে পাঠানোর পথ খুলে।
কিন্তু চুক্তির পরের দিনই শনিবার ওডেসা বন্দরে মিসাইল হামলা করে রাশিয়া। এর পর ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এমন হুমকি দেওয়া হলো।
যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ওডেসা বন্দরে মজুদ করা অস্ত্রের চালানের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা। তা ছাড়া একটি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে দিতেও হামলা করার দাবি জানায় তারা।
প্রথমে অবশ্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এ হামলার বিষয়ে কিছু জানে না। পরে এটি স্বীকার করে।
বর্তমানে ইউক্রেনে ২০ মিলিয়ন টন শস্য আটকে আছে। যার মধ্যে রয়েছে— গম, সূর্যমুখী তেল, বার্লি। ইউক্রেনে এসব শস্য আটকে থাকার কারণে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, চলতি বছর ফসলের মৌসুম শেষে আটকে থাকা শস্যের পরিমাণ সাত কোটি ৫০ লাখ টনে দাঁড়াবে।
ইউক্রেন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম শস্য রপ্তানিকারক দেশ। বিশ্বে মোট উৎপাদিত সূর্যমুখী তেলের ৪২ শতাংশ এখানে উৎপাদন হয়। এ ছাড়া ইউক্রেনে ১৬ শতাংশ ভুট্টা ও ৯ শতাংশ গম উৎপাদন হয়।
অন্য বছর ইউক্রেন যে পরিমাণ শস্য উৎপাদন করে, তার তুলনায় এ বছর যুদ্ধের কারণে উৎপাদন কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে সাধারণত আট কোটি ৬০ লাখ টন শস্য উৎপাদন হয়ে থাকে। যুদ্ধের কারণে এ বছর ৩০ শতাংশ উৎপাদন কম হতে পারে।
ইউআর/