প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কবি হেলাল হাফিজকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভোগা এই কবিকে বুধবার সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। এর আগে গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কবি হেলাল হাফিজকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল।
কবি হেলাল হাফিজের কিডনি, ডায়াবেটিস ও নিউরোলজিক্যাল নানা সমস্যা রয়েছে।১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এ কবি।
প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের কবিতা পাঁচ দশক ধরে মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’। হইচই ফেলে দেওয়া এই কবিতাগ্রন্থটির জনপ্রিয়তার রেকর্ড বাংলাদেশের অন্য কোনো কবির কাব্যগ্রন্থ এখনো পর্যন্ত ভাঙতে পারেনি। ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর ৩৩টিরও বেশি সংস্করণ হয়েছে। ২০১২ সালে আসে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’।
তবে তার অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’। এ কবিতার দুটি পঙ্ক্তি ‘‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। কবিতাটি তাকে খ্যাতি এনে দেয়।
সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কাজ করেছেন কবি হেলাল হাফিজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন দৈনিক পূর্বদেশে। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে দৈনিক দেশ পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে যোগ দান করেন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যুগান্তরের ফিচার সম্পাদক ছিলেন তিনি।
গুণী এ কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে নেত্রকোনা শহরেই। ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে একই বছর কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।
আগামী ডিসেম্বরে যুগপৎ ঢাকা ও কলকাতা থেকে প্রকাশ হচ্ছে ৩৪টি কবিতা নিয়ে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।
কবিতায় অসামান্য অবদানের স্মারক হিসেবে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন এ কবি।
এ ছাড়া তিনি পেয়েছেন- যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোনা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা।
কবিতাকে ভালোবেসে এ কবি অবিবাহিত রয়ে গেছেন। থাকছেন রাজধানী ঢাকায়।
ইউআর/