বান্দরবানে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী মার্মা সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব “ওয়াগ্যোয়েই পোয়েঃ”। বর্ষাবাস শেষে এ উৎসব পালন করছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি মার্মা সম্প্রদায়।
এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে বিভিন্ন রংঙ্গের ফানুস উড়ানোর উৎসব। তাই নানা রঙ্গের ফানুস বাতির আলোর ঝলকানিতে রঙ্গিন হয়ে উঠেছে পাহাড়ের রাতের আকাশ।
মূলত এ উৎসব বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিনয় ধর্ম , আত্মসমর্পন ও আত্মশুদ্ধির অনুষ্ঠান। দুইদিন ব্যাপী এ উৎসবকে ঘিরে এখন বান্দরবান জেলার প্রতিটি উপজেলায় চলছে নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বান্দরবানের উজানীপাড়া রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারেপ্রথম দিন সন্ধ্যায় ফানুস উড়ানো শুভ উদ্বোধন করেন। এরপরই বান্দরবানের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে বিহারে শুরু হয় ফানুস বাতি উত্তোলন মহা উৎসব।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, এই প্রবারণা উৎসব বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব হলে ও পার্বত্য জেলায় এই উৎসবকে ঘিরে বইচে আনন্দের বন্য। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে যোগ দিয়ে আসছে এবং সম্প্রীতির বান্দরবানের এই সুনাম সাড়া বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
এসময় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে আজ বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায় তাদের উৎসব সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারছে এবং আগামীতে ও পারবে।
ফানুস বাতি উত্তোলণ উৎসবে যোগ দিতে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বাঙ্গালীদের ও উপস্থিতি চোখে পড়েছে। রং বে রংয়ের বিশাল আকৃতির ফানুস বাতি আকাশে উড়ানোর দৃশ্য দেখার জন্য বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের জনসাধারণ এমনকি পর্যটকও ভীড় করছে শহরের বিভিন্ন বিহার প্রাঙ্গনে ।
ওয়াগ্যোয়েই পোয়েঃ বা প্রবারণা পুর্ণিমা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও এটি একটি সামাজিক ও আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছ। মারমাদের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মালম্বী বড়–য়া, চাকমা, তঞ্চঙ্গা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির অনেকেই এ উৎসবে যোগ দিয়েছে আর এতে সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পুরো জেলা ।
এদিকে ফানুসবাতি আকাশে উড়ানোর পাশপাশি বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে বিহারে হাজার বাতি প্রজ্জলন ও পিঠা তৈরি এবং নানা রংয়ের আলোতে আলোকিত হয়েছে বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গন।
আগামীকাল ২১অক্টোবর সন্ধ্যায় মহামঙ্গল রথ বান্দরবানের বিভিন্ন পাড়া প্রদক্ষিণ শেষে রাত ১২টায় জেলা সদরের শঙ্খ নদীতে উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের এই বর্ণাঢ্য ধর্মীয় উৎসব আয়োজন।