জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, ল্যাপটপ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় পরীর পাহাড়স্থ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার শানা শামীমুর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান বারী নূর, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম রশিদুল হক পিপিএম (সেবা), জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল দুলু ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ।
আলোচনা সভা শেষে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে লানিং এন্ড আর্নিং-এ বিশেষ অবদান রাখায় পুরস্কার হিসেবে ১০ জন আউটসোর্সিং পারসনকে ১০টি ল্যাপটপ তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
সবশেষে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন জেলা শিশু একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণার্থীরা।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ রাসেল দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। ১৯৬৪ সালের এই দিনে ঢাকার ধানমন্ডিস্থ ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ৩২ নম্বর বাড়ি বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহন করেন তিনি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জিত এ দেশের স্বাধীনতা যারা সহ্য করতে পারেনি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করে। ইতিহাসের এ বর্বরতম ও ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ড থেকে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ১০ বছরের ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলও রেহায় পায়নি। বঙ্গবন্ধুর সাথে নরপিশাচরা তাকেও নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। সে দিন মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাসেলের ছোট্ট বুক বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। গত ২৩ আগস্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছর থেকে প্রতিবছর শেখ রাসেলের জন্মদিন ১৮ অক্টোবর ক-শ্রেণির “শেখ রাসেল দিবস“ হিসেবে জাতীয়ভাবে পালিত হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের সংসারে পাঁচ সন্তান ছিল। তাদের মধ্যে শেখ রাসেল ছিল সবার ছোট। ভাই-বোনের মধ্যে অন্যরা হলেন-বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা শেখ জামাল ও শেখ রেহানা। আজ থেকে ৪৭ বছর আগে ঘাতকদের হাতে শিশু শেখ রাসেলের নির্মম মৃত্যু হলেও সে আছে এ দেশের প্রতিটি মানুষের অন্তরে।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল সকাল ৭টায় শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন, সকাল সাড়ে ৯টায় শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে আয়োজিত কেন্দ্রীয় মূল অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার, দুপুর সাড়ে ১২টায় “শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস”-প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ওয়েবিনার অনুষ্ঠান, দুপুর ১টায়সরকারী শিশু সদন ও কারাবন্দি মহিলাদের শিশু সন্তানদের মধ্যে উন্নতমানের খাবার বিতরণ, দুপুর দেড়টায় পরীর পাহাড়স্থ কালেক্টরেট জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।