ম্যাচ জিততে শেষ ২৪ বলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। এমন সময় বোলিংয়ে এসে মাত্র ৪ রান দিয়ে রাজস্থান রয়্যালসের জয়ের স্বপ্ন জিইয়ে রাখেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে সেই স্বপ্ন ভেঙে যেতে সময় লাগেনি। ১৮তম ওভারে বোলিং এসে চেতন সাকারিয়া ১৬ রান দিলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রাজস্থান।
শেষ ১২ বলে হায়দরাবাদের যখন ৬ রান দরকার তখন মুস্তাফিজের পর পর দুই বলে দুটি চার মেরে হায়দরাবাদকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন কেন উইলিয়ামসন। এবারের আসরে ১০ ম্যাচ খেলা হায়দরাবাদের এটি দ্বিতীয় জয়। এই হারে প্লে অফে খেলার সমীকরণ খানিকটা কঠিন হলো রাজস্থানের।
জয়ের জন্য ১৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হায়দরাবাদকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও ঋদ্ধিমান সাহা। উদ্বোধনী জুটিতে তাঁরা দুজনে মিলে যোগ করেন ৫৭ রান। সাহাকে ১৮ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে তাঁদের এই জুটি ভাঙেন মাহিপাল লমরোর। তিনে নেমে রয়কে দারুণভাবে সঙ্গ দিতে থাকেন উইলিয়ামসন।
ইনিংসের ১২তম ওভারে তাঁদের দুজনের ৫৭ রানের জুটি ভাঙেন চেতন সাকারিয়া। বাঁহাতি এই পেসারের বলে চিকি শট খেলতে গিয়ে স্যামসনের কাছে আউট হয়েছেন ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া রয়। ৪২ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলার দিনে আটটি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
পরের ওভারে মুস্তাফিজকে বোলিংয়ে ফেরান স্যামসন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে ভুল করেননি বাংলাদেশের এই পেসার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম দুই বল ডট করেন মুস্তাফিজ। তৃতীয় বলে তাঁকে চার মারেন উইলিয়ামসন। তবে ওভারের শেষ বলে নিজে দারুণ এক নিয়ে প্রিয়াম গার্গকে সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ।
এরপর আর কোন উইকেট হারায়নি হায়দরাবাদ। ৪৮ রানের জুটি গড়েন দলকে জয় এনে দেন উইলিয়ামসন ও অভিষেক শর্মা। মুস্তাফিজকে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্বে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন উিইলিয়ামসন। তাঁকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া অভিষেক অপরাজিত ছিলেন ২১ রানে। রাজস্থানের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন লমরোর, মুস্তাফিজ ও সাকারিয়া।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে রাজস্থানকে প্রত্যাশিত শুরু এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার এভিন লুইস ও যশস্বী জয়সওয়াল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে প্রথমবার বোলিং এসেই হায়দরাবাদকে ব্রেক থ্রু এনে দেন ভুবেনশ্বর কুমার। ডানহাতি এই পেসারের বলে তুলে মারতে গিয়ে লেগ সাইডের সীমানার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা সামাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৬ রান করা লুইস।
এরপর তিনে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জয়সওয়াল ও স্যামসন। তাঁদের দুজনের জুটি থেকে আসে ৫৬ রান। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা জয়সওয়াল ৩৬ রান করে ফিরলে ভাঙে তাঁদের এই জুটি। চারে নেমে থিতু হতে পারেননি লিয়াম লিভিংস্টোনও। রশিদ খানের শর্ট বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন ৪ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
পাঁচে নেমে ধীরগতিতে ব্যাটিং করতে থাকা স্যামসনকে দারুণভাবে সঙ্গ দিতে থাকেন লমরোর। এর মাঝে ৪১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক স্যামসন। তাঁদের দুজনের ব্যাটের ওপর ভর করে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যেতে থাকে রাজস্থান। ইনিংসের ২০তম ওভারে এসে সাজঘরে ফেরেন স্যামসন।
সিদ্ধার্থ কৌলের বলে তুলে মারতে গিয়ে হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তাতে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১৮ রান দূরে থাকে সাজঘরে ফিরতে হয় স্যামসনকে। ৫৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলার দিনে সাতটি চার ও তিনটি ছক্কা মারেন তিনি।
স্যামসন ফেরার পরের বলেই আউট হয়েছেন রিয়ান পরাগ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে রাজস্থান। স্যামসনকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া লমরোর অপরাজিত ছিলেন ২৮ বলে ২৯ রান করে। হায়দরাবাদের হয়ে ৩৬ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন কৌল।