আফগানিস্তানে নাপিতদের ওপর দাড়ি কাটা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান। দেশটির হেলমান্দ প্রদেশে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই নিষেধের ফলে এখন থেকে নাপিতরা আর ইচ্ছেমত পুরুষের চুল, দাড়ি কাটতে পারবে না। তালেবান নেতারা বলছেন, এতে করে তাদের বর্ণিত শরিয়াহ আইনের লঙ্ঘন হয়। তালেবানের ধর্মীয় পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। কাবুলে কর্মরত কয়েক জন নাপিতও জানিয়েছেন তারাও একই ধরণের নির্দেশনা পেয়েছেন।
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবান উদার শাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে তাদের নতুন এই নির্দেশনায় পূর্বের মেয়াদের মতো কঠোর শাসনের ইঙ্গিত দেখছেন অনেকেই। গত শনিবার হেরাত প্রদেশে অপহরণের অভিযোগে চার জনকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ রাস্তায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের সেলুনগুলোতে টানিয়ে দেওয়া নোটিশে নাপিতদের সতর্ক করে বলা হয়েছে চুল বা দাড়ি কাটার সময়ে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, এ নিয়ে কারো অভিযোগ করার অধিকার নেই।
কাবুলের এক নাপিত বলেন, তালেবানরা এসে আমাদের দাড়ি কাটা বন্ধ করার আদেশ দিচ্ছে। তাদের একজন আমাকে বলেছে তারা আমাদের ধরতে ছদ্মবেশেও আসতে পারে।
তালেবানের প্রথম সরকারের আমলে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে নকশাদার চুল কাটা নিষিদ্ধ করা হয়। আর পুরুষদের দাড়ি রাখতে উৎসাহিত করা হয়। তবে তালেবানের পতনের পর আফগানিস্তানে পুরুষের ক্লিন শেভ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আর বহু আফগান পুরুষ সেলুনে গিয়ে নানা স্টাইলে চুল কাটিয়ে থাকে।
নাপিতরা জানিয়েছেন, তালেবানের নতুন নিয়মের কারণে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। তারা বলেন, অনেক বছর ধরেই আমাদের সেলুনে অল্প বয়সীরা তাদের ইচ্ছামতো শেভ করে। এখন দেখা যাচ্ছে এই ব্যবসা চালানোর কোনও উপায় নেই।
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ফ্যাশন সেলুন ও নাপিতগিরি নিষিদ্ধ ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে এটাই আমার কাজ আর কখনো ভাবিনি এটা চালিয়ে যেতে পারবো না।