সরকারে অংশগ্রহণ, কাজের অধিকার ও তালেবানের সঙ্গে আলোচনার দাবিতে আফগানিস্তানের কাবুলে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে একদল আফগান নারী।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) আফগান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে এ বিক্ষোভ করে তারা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রায় ৫০ জন নারী এই বিক্ষোভে অংশ নেয়। নারীদের ওই বিক্ষোভ মিছিলটিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের গেইটের কাছে থামানো হয়। এ সময় তালেবান সদস্যরা তাদেরকে ঘিরে ফেলে এবং প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দেয়।
এ প্রসঙ্গে রাজিয়া বারাকজাই নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলাম। এ সময় তালেবান সদস্যরা আমাদের বাধা দেয়। আমাদের ছত্রভঙ্গ করতে পেপার স্প্রে ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো নিজেদের অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নামলেন আফগান নারীরা। এর আগে বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের পশ্চিমের শহর হেরাতে চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের অধিকারের দাবিতে নারীদের বিক্ষোভ হয়েছিল।
এদিকে ইন্টারনেটে পর্নসাইট ঘেঁটে আফগান যৌন কর্মীদের খুঁজে বের করার কাজ করছে তালেবান। খুঁজে বের করে তাদের প্রকাশ্যে হত্যা করা হবে বলে দাবি করা হয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে।
গত জুনে আফগানিস্তানের মানবাধিকার সংস্থা জানায়, কেবল রাজধানী কাবুলে হাজারের বেশি যৌনকর্মী রয়েছে।
ট্যাবলয়েডটির খবর অনুযায়ী, কিছু পর্ন ভিডিওতে আফগান নারীদের পশ্চিমাদের সঙ্গে যৌন সংস্পর্শে দেখা যাওয়ায় আরও ক্ষেপে উঠেছে তালেবান জঙ্গিরা। ওই নারীদের খুবই প্রকাশ্যে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এই খবরে আফগান জনগণের ভাষ্য, নারীরা জঙ্গি গোষ্ঠির মাধ্যমে গণধর্ষণের শিকার হচ্ছে তালেবানের উচিত আগে যদি হত্যা করা হয়, ফাঁসিতে বা পাথর নিক্ষেপ করে, তাহলে যদি আগে জঙ্গিদের হত্যা করা হয়।
অবশ্য আফগানিস্তানে যৌনবৃত্তি গুরুতর অপরাধ হলেও এর নির্দিষ্ট কোনো দণ্ডবিধি নেই। যদি যৌনকর্মের দায়ে কেউ ধরা পড়ে তাহলে কেবল তার কারাদণ্ডের বিধান আছে।
তবে নব্বইয়ের দশকে (১৯৯৬ থেকে ২০০১) তালেবানি শাসনে এই অপরাধে নারীদের জনসম্মুখে শাস্তি দেওয়া হতো।
তালেবানের বক্তব্য, নারীদের অধিকার রক্ষা করা হবে ‘ইসলামিক আইন’ মেনে। শিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে পারলেও ইসলামিক আইন মেনেই নারীদের ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তালেবানের।
যদিও তালেবানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে বিভিন্ন জায়গা থেকে মৌলিক অধিকার খর্বের অভিযোগ উঠেছে। কাবুল, হেরাতে তালেবানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতেও দেখা যায় নারীদের।
এদিকে তালেবানি সংস্কৃতি ধরে রেখে নারীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানান তালেবানি মুখপাত্র সুহেল শাহিন। এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুহেল শাহিন বলেন, হিজাব ছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে যাওয়া পশ্চিমা সংস্কৃতি। আফগানিস্তানের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না। তাই তালেবান এর বিরোধিতা করে। পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রেও ‘সংস্কৃতি’ মেনে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপের ইঙ্গিতও দেন সুহেল।