মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দিতে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে সরকার। প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক নারী-পুরুষ এবং অঞ্চলকে প্রাধান্য দিয়ে বিশেষ এই কার্যক্রম ৭ আগস্ট থেকে চলছে। শেষ হবে ১২ আগস্ট। দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও এই গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) থেকে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ৫৮টি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ৪৮ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা প্রদান করা হবে।
গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ্ রেজওয়ান হায়াত।
তিনি বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১০ আগস্ট থেকে সরকারি উদ্যোগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।
শাহ্ রেজওয়ান হায়াত বলেন, রোহিঙ্গাদের ‘ফ্যামিলি কাউন্টিং নাম্বার’ বা পরিবার পরিচিতি নম্বর রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে তাদের টিকা দেয়া হবে। শুরুতে ৫৫ বছর বা তারও বেশি বয়সীরা টিকা পাবেন।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর বলেন, কক্সবাজারে ২২৮টি টিকাদান কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সব সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারি টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া টিকা কার্যক্রম সফল করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনএইচসিআর ও ইউনিসেফসহ কিছু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাপোর্ট দিচ্ছে।
ডা. মাহবুবুর আরো বলেন, প্রথম ডোজ দিতে যদি ৩ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন হয় তাহলে তা করা হবে। বৃষ্টির জন্য ক্যাম্পের রাস্তা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চলাচলে সমস্যা হয়। এসব কারণে কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে।
সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ২৯৭ জনের জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২ হাজার ৬৫৪ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। এখন পর্যন্ত জেলায় করোনায় ২০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ২৯ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী।
সিভিল সার্জন অফিসের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, জেলায় ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ২৯৭ জনের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২ হাজার ৬৫৪ জন শরণার্থী। এখন পর্যন্ত জেলায় ২০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য ২৯ জন রোহিঙ্গা ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে অন্তত ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। নতুন পুরাতন মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে। যার মধ্যে কয়েক দফায় ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়েছে।