দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারি করোনাভাইরাসে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন ২৫৮ জন। এর আগে গতকাল এক দিনে সর্বোচ্চ ২৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেলেন ১৯ হাজার ৭৭৯ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৯২৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৪৩৯ জন।
মঙ্গলবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত এক দিনে সর্বোচ্চ নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ৫৫ হাজার ১৫৯টি আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫২ হাজার ৪৭৮টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭১১টি।
গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৪৩৯ জন। এ পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ১০ লাখ ২২ হাজার ৪১৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ২৮.৪৪ শতাংশ। গতকাল ছিল ২৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের গড় হার ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গতকাল ছিল ১.৬৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, করোনায় নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ১৩৮ ও নারী ১২০ জন। এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ১৪৭ জন। ৫০ থেকে ৬০ বছরের ৫৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৮ জন ও ১১ থেকে ২০ বছরের দুইজন।
মৃত ২৫৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৮৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৬১ জন, রাজশাহী বিভাগের ২১ জন, খুলনা বিভাগের ৫০ জন, বরিশাল বিভাগের ১৩ জন, সিলেট বিভাগের ৭ জন, রংপুর বিভাগের ১১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ১১ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় ২৩ জুলাই থেকে আবার ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চলছে।