ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কঠোর লকডাউন শিথিল করা হলেও আজ শুক্রবার থেকে আবারও শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় এই লকডাউনের কোনো পরিবর্তন নেই। এমনটি জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘যেভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, সেভাবেই এই বিধিনিষেধ হবে। কোনো পরিবর্তন নেই। এই বিধিনিষেধ হবে ‘সবচেয়ে কঠোরতম বিধিনিষেধ।’ বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ থাকবে। এই সময়ে সব ধরনের শিল্পকারখানাও বন্ধ থাকবে। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে শিল্পকলকারখানা খোলা রাখার দাবি থাকলেও বিষয়টি এখন পর্যন্ত সরকার আমলে নেয়নি। তবে এর আগের বিধিনিষেধের মধ্যে খোলা ছিল শিল্পকারখানা।
আজ শুক্রবার খুব সকাল থেকেই ঢাকামুখি মানুষের স্রোত দেখা গেছে। তবে সবাইকে নিজের গন্তব্যে যেতে হচ্ছে পায়ে হেঁটে। কোন প্রকার যানবাহন নেই সড়কে। তাই নিরুপায় মানুষ পায়ে হেঁটেই রওনা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছরের ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। এর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করেছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ভয়াবহ সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ ঘোষণা করা হয় গণপরিবহন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় তা আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সরকার আটদিন কঠোর বিধিনিষেধে শিথিলতা আনে। এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে আজ শুক্রবার থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও কঠোর লকডাউন জারি করা হয়।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ২৩ জুলাই-৫ আগস্ট আগের বিধিনিষেধের মতো সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন, অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তখন সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাপ্তরিক কাজগুলো ভার্চ্যুয়ালি সম্পন্ন করবেন। এ ছাড়া শপিং মল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট, শিল্পকারখানা, সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
তবে আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন, কৃষিপণ্য-উপকরণ, খাদ্যশস্য-খাদ্যদ্রব্য পরিবহন বা বিক্রি, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইনে কেনা বা খাবার নিয়ে যাওয়া) করতে পারবে।