আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘করোনাকালে এখন রাজনীতি হচ্ছে অসহায়, খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বিএনপি এই দুঃসময়েও মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে। বিএনপির রাজনীতি জনমানুষের জন্য নয়। তাদের রাজনীতিতে ত্যাগের কোনো মহিমা নেই, আছে শুধু ভোগের উদগ্র বাসনা।’
সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংকালে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হঠাৎ গজিয়ে ওঠা কোনো ভূঁইফোড় রাজনৈতিক সংগঠন নয়, দেশের প্রতিটি অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে। এদেশের মাটির অনেক গভীরে আওয়ামী লীগের শেকড়, শুধু ভৌগোলিক স্বাধীনতাই নয়, অর্থনৈতিক মুক্তিও এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি, উল্টো এই রাজনৈতিক দলটি ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগকে যারা নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল বরং তারাই নিশ্চিহ্ন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগকে যারা জনবিচ্ছিন্ন মনে করে, তারা নিজেরাই এখন জনবিচ্ছিন্ন ও জননিন্দিত। তাদের রাজনীতি আজ অস্তিত্ব সংকটে।’
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির জনক বিএনপি, আওয়ামী লীগ নয়।’
ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুন্ঠিত করতে চায়, কারা স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছিল, এখনও কারা স্বাধীনতা বিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে তা দেশবাসী জানে। স্বাধীনতার ঘোষক আর ঘোষণার পাঠক এক নয়, এ সত্যটা বিএনপিকে অনুধাবন করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রসরমান সংগ্রামের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিকভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবন-মানোন্নয়নে সময়োপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। নাগরিকের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবার জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে সরকার প্রায় এক লাখ বিশ হাজার গৃহহীন মানুষকে বাড়ি উপহার দিয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি স্থানের নির্মাণ কাজের ত্রুটি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে, যা বাস্তবায়িত প্রকল্পের শূন্য দশমিক ২৫ ভাগ। ত্রুটিপূর্ণ স্থাপনা চিহ্নিত হয়েছে, সরকারি খরচে তা মেরামত এবং প্রয়োজনে পুননির্মাণ করা হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এসব গৃহ সরকারি খাস জমিতে নির্মিত হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে খাস ভূমিসহ তুলনামূলক নিচু স্থানে হওয়ায় স্থাপনাসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও বিশাল কর্মযজ্ঞের হিসেবের খাতায় ক্ষুদ্র অংশে ত্রুটি দেখা দিলেও যারা এই ত্রুটির জন্য দায়ী এবং দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
এই প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি মহৎ উদ্যোগ এবং গভীর আবেগ ও ভালোবাসার কর্মসূচি বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।