চট্টগ্রামে আবুল খায়ের গ্রুপের পরিবেশকের গুদাম থেকে ৩৩ লাখ টাকার সিগারেট লুটের মূল হোতা নূর নবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে নুর নবীর সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাতির মালামাল ক্রয় করা কুমিল্লা সদরের পশ্চিম বাগিচাগাঁও এলাকার মো. শাহজাহান (৬০) এবং তার ছেলে মো. এনায়েত উল্লাহকে।
পুলিশ জানায়, সহজে লুট ও বিক্রির সুবিধার্থে তাদের পছন্দ সিগারেট। তবে তারা ২০ লাখ টাকার মূল্যমানের নিচে মালামাল লুট করেন না।
জানা গেছে, নুর নবী নোয়াখালীর হাতিয়া থানার পশ্চিম বড়ডেল গ্রামের ছেলে। এলাকায় সবাই তাকে চেনেন সমাজসেবক হিসেবে। ডাকাতির টাকায় এলাকায় দান-খয়রাতও করেন তিনি। গরু চুরির মাধ্যমে নুর নবীর এ পথে যাত্রা শুরু হয়।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-বন্দর) নোবেল চাকমা জানান, আগে বিভিন্ন দোকানে ডাকাতি করলেও বছর খানেক ধরে নূর নবী ও তার দলের টার্গেট বিভিন্ন সিগারেটের দোকান ও গুদাম। যেসব দোকানে অন্তত ২০ লাখ টাকার সিগারেট পাওয়া যাবে সেসব দোকান কিংবা গুদাম হচ্ছে তাদের ডাকাতির লক্ষ্য।
রোববার (৩০ মে) রাতে সীতাকুণ্ড থানার বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে মো. নুর নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহজাহান ও তার ছেলেকে কুমিল্লা সদর থানার বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লুট করা ৯২ কার্টন সিগারেট এবং দুই কার্টন বিক্রির ৬৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
২৭ মে নগরের ডবলমুরিং থানার পোস্তারপাড় এলাকায় আবুল খায়ের গ্রুপের ডিলার খাজা ট্রেডার্সের গুদামে ডাকাতি করে ৩২ লাখ টাকার সিগারেট নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ডবলমুরিং থানায় মামলা হলে তদন্ত করতে গিয়ে ডবলমুরিং থানা-পুলিশ ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে আন্তজেলা এই ডাকাতদলের এই সন্ধান পায়।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) মো. আবদুল ওয়ারিশ আজ সোমবার দুপুরে ডবলমুরিং থানা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ডাকাতদলে ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছেন। তাদের প্রধান নুর নবী। দলের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে নুর নবী পুলিশকে জানিয়েছেন, সাধারণত তারা ২০ লাখ টাকার মালামাল টার্গেট (লক্ষ্য) করেন। এর কম করলে তাঁদের পোষায় না। গত ৭ বছরে ১০ জেলায় ৩০টি ঘটনায় ১০ কোটি টাকার সিগারেট লুট করেছেন তারা। চলতি বছর লুট করেছেন কোটি টাকার বেশি সিগারেট।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, চক্রটি ডাকাতিতে বাধা দিলে খুনও করে। এই পর্যন্ত ডাকাতি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে দুজনকে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন নুর নবী। তিনি নিজ এলাকায় সংগঠক ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। বিয়ে করেছেন তিনটি।