আনোয়ারা উপজেলায় বজ্রপাতে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এই শ্রমিকে মৃত্যু নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
রোববার (২৩ মে) সন্ধ্যা ৭টার সময় উপজেলার ৪নং বটতলী ইউনিয়নের ৯নং পশ্চিম বরৈয়া এলাকার গোদার পাড়া পোল নামক স্থানে তাদের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার ৪নং বারশত ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড পশ্চিম বরৈয়া গ্রামের হাজী আরবান আলী বাড়ীর আজিজুল রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আবুল কাশেম (৩৮) এবং একই এলাকার লালু মাঝির বাড়ির মৃত অচু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৪৫)। তারা দুজনই রাজ মিস্ত্রীর কাজ করতো বলে পারিবারিক সূত্রে নিশ্চিত করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করছেন নিহত ইলিয়াসের বড় ছেলে মোহাম্মদ সুমন ও নিহত মোহাম্মদ আবুল কাশেম বড় ভাই মোহাম্মদ আহম্মদ মিয়া ।
জানা যায় মোহাম্মদ আবুল কাশেম ও মোহাম্মদ ইলিয়াছ গহিরার বার আউলিয়া গ্রামে রাজমিস্ত্রী কাজ করতে গেছিলো রবিবার সকালে কাজ শেষ সন্ধ্যায় আসার সময় অতিরিক্ত ভারী বর্ষণ ও বজ্রপাত শুরু হওয়ায় তারা খোলা মাঠ দিয়ে বাড়ি আসছিলো। তারপর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া না যায়নি। স্বজনরা খোঁজাখুঁজি এক পর্যায়ে রাত তিনটার দিকে বাড়ির পাশের বিলে মধ্যে তাদের দুজনকে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পাই নিহত ইলিয়াসের ছেলে সুমন সহ তার স্বজনরা। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে জানালে উনি থানায় বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে লাশ দুইটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহত ইলিয়াসের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী সাথে সর্বশেষ রবিবার সন্ধ্যা ৬ টায় মোবাইলে মাধ্যমে কথা হয়। ওনারা বাড়িতে আসার জন্য রওনা হয়েছিলো। তারপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি মোবাইল ও বন্ধ ছিলো। আমার ছেলে ও তার প্রতিবেশি বন্ধুদের রাত দুইটায় খোঁজতে বের হলে গ্রামের পাশে বিলে তার বাবা ও মোহাম্মদ আবুল কাশেমের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে সকলকে খবর দেয়।
নিহত মোহাম্মদ আবুল কাশেম এর বড় ভাই আহমদ মিয়া বলেন, আমার ভাই সকালে কাজে গেছিল কাজ থেকে সন্ধ্যায় ফিরে আসার কথা ছিল। সন্ধ্যায় ফিরে আসায় আমরা চিন্তিত হয়ে খোজা খুঁজি করি। রাত তিনটা দিকে আমার ছোট ভাই সহ বাড়ির থেকে দূরে একটি জমিতে তাদের মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কিভাবে এই ঘটনা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা।
৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ৪নং বারশত ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড পশ্চিম বরৈয়া গ্রামের হাজী আরবান আলী বাড়ীর আজিজুল রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আবুল কাশেম এবং একই এলাকার লালু মাঝির বাড়ির মৃত অচু মিয়া ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াছ এর মৃতদেহ পাওয়া খবর পেলে আমি ঘটনা স্থলে যাই এবং কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে স্থানীয়দের সাথে কথা বলছি। সকলের ভাষ্যমতে সন্ধ্যার বজ্রপাতে তাদের মধ্যে হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তারপরও মৃত্যু ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ। লাশ আজকে তদন্ত জন্য মর্গে নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে জানা যাবে মৃত্যু কারণ। তারা দুজনই রাজ মিস্ত্রীর কাজ করতো। নিহত আবুল কাশেমর স্ত্রী, এক মেয়ে ২ছেলে রয়েছে এবং ইলিয়াসের স্ত্রী দুই ছেলে ২মেয়ে রয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পরিবার গুলো ভেঙ্গে পড়েছে। এই সত্যি অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার তদন্ত অফিসার সৈয়দ ওমর বলেন, সোমবার দিবাগত রাতে ফসলি জমিতে লাশ পাওয়ার ঘটনা জানতে পারলে আমাদের একটি টিম গিয়ে সেই লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে ওরা বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। মৃত্যুর সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য আমরা লাশ গুলো ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।