ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডাবল লাইন ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নিরবচ্ছিন্নভাবে নতুন যুগের সূচনা হলো। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনও ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না। কমে আসবে ট্রেনযাত্রার সময়ও।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার অংশে আগে একটি রেললাইন ছিল। এখন তা দুই লেন করা হয়েছে। এই ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ৩২১ কিলোমিটার ডাবল লাইনে উন্নীত হলো।
‘আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রূপান্তর’ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৫ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। প্রায় সাত বছর সময় লেগেছে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় দুবার বাড়ানো হয়েছিল প্রকল্পের মেয়াদ।
প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিয়েছে ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ। এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর এক হাজার ২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থায়ন করেছে সরকার।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আন্তনগর ট্রেনের যাতায়াত সময় পৌনে এক ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা কমবে। এ লাইনে একসময় শুধু মিটারগেজ ট্রেন চলতে পারতো। দুই লেন চালু হওয়ার পর থেকে সেখানে মিটারগেজের পাশাপাশি ব্রডগেজ ট্রেনও চলতে পারবে।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ওই সময় কাজ শেষ হয়নি। এরপর ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।
প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তির মুখে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কসবা রেলস্টেশন, স্টেশনের ডাবল লাইন ও সালদা রেলসেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখার ১৫০ গজের ভেতর কাজ হচ্ছে, এমন অজুহাতে বিএসএফ বাধা দিয়েছিল। আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের মার্চে আবার কাজ শুরু হয়।
এমজে/