দিগন্তজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের হাসি চোখে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। এ ফুল দেখতে আর সূর্যমুখী বাগানে নিজেদের ছবি, সেলফি তুলতে নানা বয়সী সৌন্দর্য্য পিপাসু মানুষ প্রায় প্রতিদিন ভিড় করছেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন সূর্যমুখী আবাদ করা জমিতে।
উৎসুক মানুষের কাছে এসব সূর্যমুখী ফুল শুধু সৌন্দর্য্যের ডালপালা মনে হলেও বাস্তবে দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর একটি উপকরণ এটি। সূর্যমুখী ফুলের শুকনো বীজ থেকে উৎপাদিত হয় তেল। পাশাপাশি এ ফুলের উচ্ছিষ্ট থেকে বের হয় ‘খইল’ নামের এক ধরনের গোখাদ্য।
তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় মিরসরাই উপজেলায় সূর্যমুখী চাষে অনেকে নতুন করে উদ্যোক্তা হয়ে এগিয়ে আসলেও সূর্যমুখী ফুল থেকে তেল ভাঙ্গানো আধুনিক যন্ত্রের অভাবে সরিষা আবাদের চাইতে এটি চাষাবাদে অনাগ্রহের সংখ্যাই বেশি। তবে সূর্যমুখীতে অধিক লাভজনক হওয়ায় এই উপজেলার কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে জানায় উপজেলা কৃষি অফিস।
সূর্যমুখী চাষি নঈম উদ্দিন জানান, কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী নিয়ে এ বছর পরিক্ষামূলকভাবে ৩৩ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষাবাদ করেন। এ পর্যন্ত তার প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, বিক্রির সম্ভাব্য আশা করছেন ২০-২২ হাজার টাকা। তবে আধুনিক মেশিন থাকলে হয়তো এই সূর্যমুখী ভাঙ্গিয়ে এর থেকে পাওয়া তেল নিজে ব্যবহার করতেন অথবা বাজারজাত করতেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর পুরো উপজেলায় ৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩০জন কৃষক সূর্যমুখী চাষাবাদ করেছেন। এর ভেতর কৃষি অফিস কর্তৃক ২৫ জনকে প্রণোধনা এবং ৫জনকে প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। তবে আগামী বছর থেকে এর সংখ্যা আরো বাড়বে বলেও জানা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, আধুনিক তেল ভাঙ্গানো মেশিন না থাকায় এ তেল একটু তেতো হয়, এতে এই তেল ব্যবহারে এখানকার মানুষ অব্যস্ত নয়। মিরসরাইতে সূর্যমুখী বিক্রির এবং তেল ভাঙ্গানোর সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় এটি আবাদের ক্ষেত্রে কৃষকের আগ্রহ কম। উপজেলায় ভাঙ্গানোর ব্যবস্থা হলে আশাকরি সূর্যমুখী চাষাবাদে কৃষকের আগ্রহ বাড়বে।
এমজে/