পাঠ্যবই মুখস্থ করে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করছে। আমরা বেশি সংখ্যক পিএইচডি ডিগ্রিধারী পেয়ে যাচ্ছি। কিন্ত সে তুলনায় উদ্ভাবক পাচ্ছি না। বৈশ্বিক উদ্ভাবনের সূচকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। প্রথমত ভাষাগত সমস্যা, টেক্সট বই মুখস্থ করে উর্ত্তীণ হচ্ছে। যার কারণে দেশের ৯৯ শতাংশেরই শিক্ষার্থীর সরকারি চাকরি বা বিশ্বের চাকরি বাজার ধরার সক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় সার্কিট হাউজের সম্মেলনে কক্ষে ‘পাঠ্যভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি বিভাগীয় পর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা’তে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের বড় জনগোষ্ঠী স্বাক্ষরতা পর্যায়ে এসেছে। প্রায় ৯৯ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন লাভ করতে পারছে। এখন আমাদের শিক্ষার্থীদের নানা বিষয় পড়িয়ে আমরা তাদের চিন্তা জগৎকে উন্মুক্ত করতে চাই। তারা যাতে উদ্ভাবক হয়ে উঠে। আমাদের পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থায় লক্ষ্য হচ্ছে উদ্ভাবক গড়ে তোলা। যেটা আমরা বলছি স্মার্ট সিটিজেন, আর এটা তখনই হবে যখন শিক্ষার্থীদের ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছে জাগবে। আমাদের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের এই প্রবণতা নেই। তবে এই সমস্যা স্থায়ী হবে না। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের স্মার্টসিটিজেন হিসেবে গড়ে তুলবো। ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা লক্ষ্য মাত্রা অর্জনের পথ সুগম হবে। বর্তমান শিক্ষার্থীদের অনেক কিছু পড়তে হবে,শিখতে হবে, জানার আগ্রহ থাকতে হবে। তার জন্য পাঠ্য বইয়ের বাইরেও বই পড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, অল্প কয়েকজন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থী নিয়ে একটা দেশের রুপান্তর করা কখনো সম্ভব নই। পৃথিবীর উন্নত দেশে স্কুলভিত্তিক পরীক্ষা নিয়ে এত মাতামাতি করে না। আমাদের মিডিয়াগুলো এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু করে। কোন স্কুল ভালো ফলাফল করলো, কোনটা একটু খারাপ করলো তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা সৃষ্টি করে। আগে আরও ভয়াবহ অবস্থা ছিলো। ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের ছবিসহ প্রকাশ করতো। কিন্ত সেই ভালো ফলাফল প্রাপ্তরা কত জন উদ্ভাবক হয়েছেন, উদ্ভাবক সেরা শিক্ষার্থী হয় না। আইনস্টাইন তো টপ শিক্ষার্থী ছিলো না। বড় রাজনৈতিক নেতারা সেরা শিক্ষার্থী ছিলো না। সকল শিক্ষক, অভিভাবকদের শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল থেকে মেধা বিকাশে সুযোগ করে দিতে হবে।
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, প্রধান বক্তা স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী, এবং সভাপতি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমজে/