পৃথক হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও সদর থানায় দায়ের করা পৃথক দুটি হত্যা মামলায় এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হত্যা মামলায় ছয় জনকে এবং জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম কুমারখালী থানার একটি হত্যা মামলায় চার জনকে এ দণ্ড দেন।

সদর উপজেলার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিন বিশ্বাসের তিন ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস (৬০), বাবুল বিশ্বাস (৪৫), হাবিল বিশ্বাস (৫১), আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস ছেলে মাহামুদুল হাসান সবুজ (৩০), একই এলাকার কামরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে রাশেদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৪১), মৃত জলিল গায়েনের ছেলে মাসুদ গায়েন (৩৯)।

এছাড়া কুমারখালি থানার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজবাড়ী জেলার তেতুলিয়া এলাকার আব্দুল আজিজ মোল্ল্যার ছেলে জিল্লুর রহমান (৩০), একই এলাকার দলিল উদ্দিনের ছেলে তারেক শেখ ওরফে মাধব (৩০), মাহাফুজুর রহমানের ছেলে জাহিদ খাঁ (৩০), সিংড়া এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে সৌরভ মিয়া (৩৬)(পলাতক)।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস, মাহামুদুল হাসান, বাবুল বিশ্বাসসহ ছয় জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল সকালে ইউপি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ও বিবদমান শত্রুতার জেরে স্থানীয় সোহরাব উদ্দিন মোল্লার ছেলে মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মাহবুবুল করিম মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক শরীফ মঞ্জুর ২২ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন।

অপরদিকে, ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার চরসাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দ চরের ঘাটে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পরদিন ১ নভেম্বর কুমারখালী থানা পুলিশের এসআই লিয়াকত আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালে ৩১ অক্টোবর ৩০২/৩৪ ধারায় চার জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্তরা রাজবাড়ী জেলার তেঁতুলিয়া এলাকার হাশেম শেখের ছেলে মিঠু শেখকে (২৪) ধরে এনে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে যায়।

কুষ্টিয়া আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি৷ (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। পরে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ মোট ১০ ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন পরিমাণ অর্থদণ্ড করেন আদালত।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img