উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে। অতিরিক্তি পানির চাপে বাঁধ ভেঙে হাওর এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। পাহাড়ি ঢল ও পাশের সুনামগঞ্জ জেলার ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করায় নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি উপজেলার কীর্তনখোলা বাঁধে ফাটল ধরেছে। ফসল ক্ষতির আশঙ্কায় বাঁধ রক্ষায় দিনরাত কাজ করছেন কৃষকরা।
জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, খালিয়াজুড়ির ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বেশ কয়েকটি ফসল রক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ইতোমধ্যে খালিয়াজুড়ির কীর্তনখোলা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা মিলে বাঁধ মেরামতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ মেরামতের কাজ তদারকি করছেন।
এদিকে বেড়িবাঁধের বাইরে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বর্তমানে ধনু নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় রয়েছে। কৃষকরা প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন সময় পেলে ফসল ঘরে তুলতে পারবে।
খালিয়াজুড়ি উপজেলার ধনু নদীর তীরবর্তী লক্ষ্মীপুর গ্রামের চুনাই হাওর। হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের কাঁচাপাকা ফসল। তড়িঘড়ি করে কৃষকরা যতটুকু পারছেন ধান কেটে ঘরে তুলছেন গো খাদ্যের জন্য।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল খালেক জানান, শুধু চুনাই হাওর নয়। গত ৩০ মার্চ থেকে অদ্যাবধি খালিয়াজুড়ির কীর্তণখলা, বাদিয়াচর, মনিজান, হেম নগর, টাকটারের হাওরসহ বেশ কয়েকটি হাওরের পাঁচশ’ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এসব হাওর বাঁধের বাইরে থাকায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। নিম্নাঞ্চল হওয়ায় কৃষকরা এখন চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মূল হাওরের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা।
কৃষক কলিম উদ্দিন বলেন, নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ফসল ঘরে তুলতে না পারলে অভাব দেখা দেবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তায় সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত জানান, বাঁধ রক্ষায় প্রশাসনের সহায়তা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা মিলে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার জন্য তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নেত্রকোনায় ১৩৪টি ছোট-বড় হাওর রক্ষা করতে এ বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৮২ কিলোমিটার হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামত করেছে। জেলায় এ বছর ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৮ হেক্টর জমির বোরো আবাদ হয়েছে।
ইউআর/