এক সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরা নিয়েই হয়ে গেলো নাটক! প্রথম দিকে আজই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল বামহাতি অলরাউন্ডারের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে থেকে যাচ্ছেন সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাকিবের ঢাকায় ফিরে আসা নিয়ে গত কয়েক ঘণ্টা ধরে তথ্য বিভ্রাট চলছিল। ঢাকা থেকে জালাল ইউনুস দুই দফা বক্তব্য দিয়েছেন। প্রথমে বলেছিলেন, বড় ক্রাইসিসে যে কোনও সময় ফিরতে পারেন সাকিব। এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর জালাল ইউনুস জানান, সাকিব রাতেই দেশে ফিরবেন। এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খালেদ মাহমুদ সজুন জানিয়েছেন, সাকিব থেকে যাচ্ছেন দলের সঙ্গেই। সবমিলিয়ে তার দেশে ফিরা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি দেখা গেছে।
প্রাথমিকভাবে সোমবার রাতেই ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত ছিল। পরবর্তীতে সাকিব সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন। বিষয়টি নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছেন, ‘ওর (সাকিব) একটা মেডিকেল ইমার্জেন্সি আছে। ওর বাসায় অনেকেই অসুস্থ। যার কারণে ওর মধ্যে একটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তো আছেই। ওর যাওয়ার জন্য টিকিট আমাদের প্রায়ই বুকিং করতে হচ্ছে। ওর আজকে (সোমবার) রাতেই চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে (সাকিব) খেলবে, এটাই বলতে পারি।’
আরও যোগ করে তিনি বলেছেন, ‘সাকিবের আজ যাওয়ার কথা ছিল এটা সত্যি কথা। যেটা জালাল ভাই বলেও দিয়েছিলেন ও(সাকিব) চলে যাবে। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই সাকিব সিদ্ধান্ত নেয় সে খেলে যাবে। এখন সাকিব যাচ্ছে না। তৃতীয় ওয়ানডের পর আমরা চিন্তা করবো।’
আগামী ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। সুজন আশা করছেন, ওই ম্যাচের আগে সাকিবের পরিবার সুস্থ থাকবে এবং ম্যাচটি খেলেই পরের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, ‘আশা করি ওর (সাকিব) বাসায় সব কিছু ঠিকঠাক থাকবে। তৃতীয় ওয়ানডেটা খেলবে এবং পরে সিদ্ধান্ত নেবে সে থাকবে না যাবে।’
পরিবারের ৫ সদস্য যেখানে হাসপাতালে, এই অবস্থায় অন্য দেশে থেকে খেলায় মন দেওয়া বেশ কঠিন। সাকিবের এই ত্যাগ স্বীকার নিয়ে সুজন বলেছেন, ‘এখানেতো কারও হাত নেই। পারিবারিক বিষয়টা তো যে কোনও মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, ওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ও খেলার জন্য উদগ্রীব। প্রথম ম্যাচে সেরা হলো। দ্বিতীয় ম্যাচে রান করেনি, দারুণ বোলিং করেছে। সাকিব খেলতে চায়, সিরিজটা জিততে চায়। ও (সাকিব) জানে হুট করে ওকে ছাড়া এই কন্ডিশনে আমাদের কম্বিনেশন দাঁড় করানো কতটা কঠিন। খুব প্লিজিং একটা ব্যাপার সাকিব সেক্রিফাইজ করছে এই সিরিজটার জন্য।’
সাকিবের পুরো পরিবারই হাসপাতালে ভর্তি। তার তিন সন্তান, মা শিরিন আক্তার এবং শাশুড়ি আছেন হাসপাতালের বিছানায়। মা ও শাশুড়ির অবস্থা কিছুটা সংকটাপন্ন। তবে সন্তানরা মোটামুটি ভালোই আছেন। সাকিবের মা শিরিন আক্তার এমিনতেই হার্টের রোগী। অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়াতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া সাকিবের একমাত্র ছেলে আইজাহ আল হাসান ও মেঝো মেয়ে ইরাম হাসান নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত। অন্যদিকে বড় মেয়ে আলাইনা হাসান অব্রি ঠাণ্ডা জ্বরে ভুগছেন। তিনজনই দাদীর সঙ্গে একই হাসপাতালে ভর্তি। সাকিবের শাশুড়ির অবস্থাও বেশ খারাপ। এমনিতে ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। ভর্তি আছেন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)।
ইউআর/