করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারীর ভয়কে জয় করে শিক্ষাঙ্গণে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। আর শিক্ষার্থীদের মাস্ক, চকলেট এবং ফুলেল ভালোবাসায় বরণ করলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নগরীর দক্ষিণ হালিশহর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কাটাখালী উচ্চ বিদ্যালয়, বন্দর বালিকা বিদ্যালয়, দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসা, আইডিয়াল স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, হযরত মঈনউদ্দিন (রাঃ) দাখিল মাদ্রাসা, ভিক্টোরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্টানে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্টানসমূহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মূলত শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিলো। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর অদৃশ্য ভাইরাসের সাথে যুদ্ধের পর সংক্রমণ কিছুটা নিম্নমূখী হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনা দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখা এবং পড়ামুখী করতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পাওয়া গেলেই শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের কর্মসূচী গ্রহণ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তিনি আরো বলেন সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্টান খুলে দেওয়ার যে সুযোগ দিয়েছে সেটাকে যেনো কেউ অপব্যবহার করতে না পারে সেদিকে আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ব্যর্থ হলে পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্টান বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে সরকার।
শুধুমাত্র স্কুল খোলার দিন নয়, প্রতিদিনই এ নিয়ম অনুসরণ করার জন্য শিক্ষকদের আহবান জানান তিনি। তবে এ ব্যাপারে প্রথমেই অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। আপনার সন্তান স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে আসছে কিনা তা আপনাকেই নজরদারি করতে হবে।
এছাড়া নাস্তার বিষয়েও অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি বলেন অনেক অভিভাবক সন্তানদের বাহিরের খাবার খাওয়াতে অভ্যস্ত করেন যা সঠিক নয়। এতে করে সন্তানরা পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন অসুখে পতিত হয়। কষ্ট করে হলেও ঘরে তৈরী খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখার অনুরোধ জানান তিনি। ছুটির পর কোথাও ঘোরাঘুরি না করে যাতে সঠিক সময়ে বাসায় চলে আসে সে ব্যাপারেও খোঁজখবর রাখার আহবান সুজনের।
সন্তানরা এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি কিংবা আড্ডা দিতে গেলে আপনার সন্তানই সংক্রমিত হতে পারে বলে অভিভাবকদের সতর্ক করেন তিনি। তিনি আরো বলেন আমাদের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসেছে। শিক্ষার্থীরা যাতে কোন রকম ভয়ের মধ্যে না থাকে সেজন্য আমরা স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করছি। ক্যাম্পাস চালু রাখার স্বার্থে আমাদের স্কুলে প্রবেশের আগে তাপমাত্রা মাপা, সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে এবং স্যানিটাইজ করে প্রত্যেককে ক্লাসে ঢুকতে দেওয়ার নিয়মটা অনুসরণ করতে হবে।
তিনি সর্দি, কাশি কিংবা জ্বর থাকলে সেসব শিক্ষার্থীদের স্কুলে না পাঠানোরও অনুরোধ জানান। আদর, ভালোবাসা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে লেখাপড়ার আগ্রহটা ফিরিয়ে আনতে পারলেই বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সক্ষম হবে বলে মত প্রকাশ করেন সুজন।
নগরীর বিভিন্ন স্কুলের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক এবং টিফিন বিতরণ করেন তিনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল, প্রধান শিক্ষকসহ সর্বস্তরের শিক্ষকবৃন্দ সুজনের সচেতনতামূলক এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, কাউন্সিলর আতাউল্লাহ চৌধুরী, সংগঠক রুহুল আমিন তপন, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নুরুল কবির, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, মো. শাহজাহান, সমীর মহাজন লিটন, মো. বাবলু, শেখ জাহেদুল ইসলাম, মাহাদী হাসান সনন প্রমূখ।