স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস আজ। এ দিনটি যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করা হবে।
আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে জাতির জনককে সপরিবারে নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল।
রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস। আজকের সূর্যোদয় হবে সেই মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে। এ দিনে নিউইয়র্ক সিটির পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ কেন্দ্র টাইম স্কয়ারে বঙ্গবন্ধুর অডিও-ভিজুয়াল ক্লিপ প্রদর্শিত হবে।
বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে টাইমস স্কয়ারে বিশ্বখ্যাত বিশাল ‘বল ড্রপ’ বিলবোর্ডে ২৪ ঘণ্টায় প্রতি দুই মিনিট অন্তর অন্তর ৭২০ বার বঙ্গবন্ধুর ক্লিপটি দেখানো হবে। অডিও-ভিজুয়াল ক্লিপটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ বিভিন্ন সময়ের স্মরণীয় মুহূর্তগুলো থাকবে।
বাঙালির মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তার চেতনা অবিনশ্বর। মুজিব আদর্শে শানিত বাংলার আকাশ-বাতাস, জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবহমান থাকবে।
প্রত্যেক বছরের তো আজও ১৫ আগস্ট যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী পালনের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আশা করি, ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল, সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধুসহ তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল হত্যা করা হয়। পৃথিবীর এ জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতেও জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে আগস্টের প্রথম দিন থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। আজ জাতীয় শোক দিবসে রাজনৈতিক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। একইসঙ্গে মহান আল্লাহর দরবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করবেন। দেশের সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডি ৩২, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা ও বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ।
জাতীয় শোক দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন।