আসন্ন ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে জনসাধরণ ও ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে জনসচেতনতায় বড় অংকের অর্থ বাহনের ক্ষেত্রে আপনার অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানি এস্কর্ট সেবা ও সহায়তা প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট থানা অথবা সিএমপি কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সায় অর্থ বহনের পরিবর্তে মোটর সাইকেল কিংবা গাড়িতে অর্থ বহন করা। বড় অংকের অর্থ একা বহন না করে সাথে অতিরিক্ত একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে রাখা। আপনার অর্থ বহন সংক্রান্ত কোনো তথ্য আগেই অন্যকে জানানো থেকে বিরত থাকা। নগদ অর্থ বাহনের পূর্বে নিশ্চিত হয়ে নিন যেন আপনার দোকান বা প্রতিষ্ঠানের কেউ দুস্কৃতকারীদের না জানিয়ে দেয়।দৈনিক নগদ অর্থ বহনের প্রয়োজন হলে মাঝে মাঝে ভিন্ন পথ ব্যবহার করুন যেন দুস্কৃতকারীরা পূর্বেই উৎপেতে থাকার সুবিধা নিতে না পারে। অর্থ বহনের সময় ব্যাগ এমনভাবে ব্যবহার করুন যেন বাহির থেকে বুঝা না যায়, এতে দুস্কৃতকারীরা প্রলুব্ধ হওয়ার সুযোগ পাবে না।বড় অংকের নোট ব্যবহার সচেষ্ট হওয়া।সকল টাকা একসাথে না রেখে বিভিন্ন জায়গায় যেমন, পকেটে, ব্যাগে, সঙ্গীয় ব্যক্তির নিকট ভাগ করে রাখা।গলি পথ কিংবা নির্জন পথ ব্যবহারের পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত ব্যস্ত সড়ক ব্যবহার করা। ট্রাফিক সিগন্যাল বা জ্যামে পড়লে অতিরিক্ত সর্তক থাকা।সিসি ক্যামেরা আছে এমন ব্যাংকের সাথে লেনদেন করা এবং ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর সন্দেহ জনক কেউ আপনাকে অনুসরণ করছে কিনা তা বুঝে উঠার চেষ্টা করা। বড় অংকের অর্থ পরিবহনের কাজটি রাতে না করে দিনের বেলায় সম্পন্ন করা। এটিএম বুথে টাকা তুলতে গেলে বুথের ভেতর কেউ আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া এবং কেউ থাকলে তিনি বের হওয়ার পর নিজে বুথে প্রবেশ করা। এটিএম বুথের অভ্যন্তরে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পিন নাম্বারটি ব্যবহারে সর্তক থাকা। সম্ভব হলে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের কাজটি অনলাইনে বা চেকের মাধ্যমে সম্পন্ন করা এবং প্রয়োজনে বড় অংকের টাকা পরিবহনে পুলিশ এস্কর্ট ব্যবহার করা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে বাসা বাড়িতে অবস্থানরতরা ঈদ যাত্রার পূর্বে ঘরের লাইট, ফ্যান, টিভি, এসি, ফ্রিজ এবং গ্যাসের চুলা ইত্যাদি ভালোভাবে বন্ধ করা। ভ্রমণের সময় মাস্ক পরিধান করে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। রাস্তায়, বাস টার্মিনাল এবং ট্রেন স্টেশনে পকেটমার ও দুস্কৃতকারী থেকে সাবধান থাকা। যানবাহনে চলাচল ও ট্রাফিক জ্যামে গাড়ির জানালা বন্ধ রাখা। আপনার সাথে থাকে মোবাইল ফোন ও হ্যান্ডব্যাগের প্রতি বিশেষ ভাবে সর্তক থাকা। ভোর রাতে বাসস্ট্যান্ডে নামলে সর্তকতার সঙ্গে চলাচল করা এবং প্রয়োজনে সকাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। ট্যাক্সি বা ভাড়ায় চালিত গাড়ি ভাড়া করার সময় গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং ড্রাইভারের নাম ঠিকানা লিখে নেওয়া এবং প্রয়োজনে ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও ড্রাইভারের নাম প্রিয়জনের মোবাইলে এসএমএস করা। যাত্রাকালে নিজের মালামালের প্রতি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখা ও রাতের বেলা মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে একাকী চলাচল পরিহার করা। যাতায়াতের সময় সহযাত্রী বেশে থাকা অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির খপ্পর থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা এবং রাত্রিকালে জনবহুল রাস্তা দিয়ে চলাচল করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেন সিএমপি।
বিজ্ঞপ্তিতে ঈদ যাত্রায় বর্জনীয়র ক্ষেত্রে বলা হয়, শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভ্রমন পরিহার করতে হবে। করোনার এই পরিস্থিতিতে তাড়াহুড়া করে কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বাসে বা ট্রেনে না উঠা। কারণ এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশংকা থাকে। অপরিচিত কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করে গাড়ি ভাড়া না করা বা গাড়িতে না উঠা।দীর্ঘ পথে যাত্রায় নির্জন বা অপরচিত স্থানে যাত্রা বিরতি না করা, অপরিচিত কারো কাছ থেকে কোনো কিছু না খাওয়া এবং একাকী ভ্রমণের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে না পড়া। ড্রাইভিং সিটে থাকা অবস্থায় চালকের সাথে কথা না বলা এবং চালককে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো বা ওভারটেকিং করতে উৎসাহিত না করার অনুরোধ জানান।
এতে আরও বলা হয়, কোরবানির হাটে ক্রয় বিক্রয়ের সময় অর্থ বহন ও লেনদেন সর্তক থাকা। জাল নোট বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিলে পুলিশের সহায়তা নেওয়া।দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে হাসিল সংক্রান্ত মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখা। পশুর হাসিল পরিশোধ করে রসিদ সাথে রাখা। পশু পরিবহনকালে কেউ চাঁদা দাবি করলে নিকটস্থ থানা বা নিন্মোক্ত কন্ট্রোল রুম নম্বরে অবহিত করা। যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে নির্ধারিত স্থান ব্যতিত অন্যকোনো স্থানে গবাদি পশুর হাট বসানো বা দাঁড় করানো যাবেনা। যানবাহন চলাচলে যেখানে বিঘ্ন ঘটবে সে স্থান থেকে পশু জবাই থেকে বিরত থাকতে হবে। পশু জবাইয়ের পূর্বে গর্ত করে নেওয়া, গর্তের মধ্যে রক্ত, গোবর ও পরিত্যক্ত অংশ পুঁতে দিতে হবে এবং জবাইকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ নিকটতম ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। এবং কোরবানীকৃত পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের জন্য প্রয়োজনে নিকটস্থ সিটি কর্পোরেশন /পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদকে সংবাদ দিতে হবে। প্রয়োজনে সিএমপি’র কন্ট্রোল রুমে ০১৩২০-০৫৭৯৯৮ অথবা ০১৩২০-০৫৭৯৯৯ অথবা যে কোনো জরুরী প্রয়োজনে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ যোগাযোগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।