চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কোভিড-১৯ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লকডাউন চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রাম নগরীর অস্বচ্ছল, ছিন্নমূল, বাস্তুহারা, হতদরিদ্র, শারীরিক প্রতিবন্ধী, ইমারত নির্মাণ ও পরিবহন শ্রমিকসহ বিভিন্ন শেণি-পেশার অসহায় দেড় হাজার পরিবারের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত উপহার সামগ্রী (ত্রাণ) বিতরণ করা হয়েছে।
আজ (১৫ জুলাই) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি।
প্রতি প্যাকেট উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল-৭ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি ছোলা, ১ লিটার সয়াবিন তেল ও ১টিঁ সাবান।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি-সদর) মাসুমা জান্নাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোছাঃ সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস.এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ) মোঃ মাসুদ কামাল, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক মোঃ নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনারের পি.এস ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি-চান্দগাঁও) মামনুন আহমেদ অনিক, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুক, এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুর জাহান আক্তার সাথী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিবেদিতা চাকমা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী, জেলা নাজির মোঃ জামাল উদ্দিন প্রমূখ। বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক টিম ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা করেন।
ত্রাণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এনডিসি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে সারা পৃথিবী আজ বিপর্যস্ত। দেশের ক্রান্তিলগ্নে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মানবিক সহযোগিতা নিয়ে সমাজের অস্বচ্ছল ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। করোনাকালে কোন মানুষ খাদ্য সংকটে থাকবেনা।
এ বিষয় দেখাশোনা করার জন্য সরকার আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। কর্মহীন কেউ যাতে সরকারী সহযোগিতা থেকে বাদ না যায় তা কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে। মুজিববর্ষে কোন মানুষ গৃহহীন থাকবেনা এ লক্ষ্যে সারাদেশের গৃহহীনদের দুই শতক জায়গার উপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সম্পূর্ণ সরকারী খরচে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে। এর চেয়ে বড় মানবতা আর কিছুই হতে পারেনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নশীল দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে ঠিক তখনই করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ সময়ে সারাবিশ্ব খুব খারাপ সময় অতিক্রম করছে। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে যারা অতি কষ্টে দিনযাপন করছে সরকার তাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
এ সময়ে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামের অস্বচ্ছল ও হতদরিদ্র প্রত্যেক পরিবারের মাঝে সরকার প্রদত্ত শুভেচ্ছা উপহার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরিধানসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করলে আমরা অচিরেই করোনা মহামারীর বৈশ্বিক বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যেসব শ্রমজীবি মানুষ একেবারে কর্মহারা হয়ে পড়েছে বা কষ্টে আছে তাদের প্রত্যেককে ত্রাণের আওতায় আনতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন।
কঠোর লকডাউনে যারা অতি কষ্টে দিনযাপন করছেন তাদের প্রত্যেককে সরকারী ত্রাণের আওতায় আনা হবে। আমরা চাই এই পরিস্থিতিতে কেউ অনাহারে ও কষ্টে থাকবেনা। যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন সরকারী সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।
নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা প্রকাশ্যে সাহায্য নিতে সংকোচবোধ করছে বা সাহায্য চেয়ে সরকারী ৩৩৩ নম্বরে ফোন ও আমাদের কাছে এসএমএস করছেন প্রত্যেক রাতে তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে গিয়ে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
লকডাউনে একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের ধনার্ঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।