রাত পোহালেই চলতি কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মাঠে নামবে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। রিও ডি জেনেইরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় রোববার ভোর ৬টায়।
যে ম্যাচে দেখা যাবে বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ব্রাজিল তারকা নেইমারকে। একাই ম্যাচের চিত্র পাল্টে দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন যারা। তবে ভিন গ্রহের ফুটবল খেলে ইতোমধ্যেই সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন মেসি। স্বাভাবিকভাবেই আসন্ন ফাইনালের সবটুকু আলো কেড়ে নিতে চাইবেন তিনি। তবে ব্রাজিলের কোচ তিতে জানালেন, ছয়বারের ব্যালন ডি অর জয়ীকে আটকানোর উপায় জানেন তিনি।
মেসিকে আটকানোর উপায় জানলেও সেটা আগেভাগেই গণমাধ্যমে বলতে চান না তিতে! ব্রাজিল কোচ বলেন, ‘আমি মেসিকে আটকানোর উপায় জানি। তবে সেটা আপনাদের বলা যাবে না। তাহলে আমাদের পরিকল্পনা ফলপ্রসূ হবে না। আমরা প্রতিপক্ষকে নিষ্ক্রিয় করব না। আধিপত্য বিস্তার করে তাদের খেলার জায়গা সংকুচিত করে দেব।’
সব ধরণের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১১১ বার মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। তার মধ্যে ৪৬টিতে জিতেছে ব্রাজিল। আর্জেন্টিনার জয় ৪০টি। বাকি ২৫ ম্যাচ ড্র। সর্বশেষ ২০০৭ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালেও ৩-০ ব্যবধানের জয় পেয়েছে হলুদ শিবির।
তবে পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে সন্তুষ্ট হতে চান না তিতে। ব্রাজিলের কোচ মনে করেন, ফাইনাল নতুন একটি ম্যাচ, ‘অতীতের কথা সামনে আনতে চাই না। অতীত দিয়ে কিছু হয় না। কোপা আমেরিকার গত দুই আসর ধরেই আমরা দুর্দান্ত ফুটবল খেলছি। পরিসংখ্যান অসাধারণ। তবে এসবের কোনও তাৎপর্য নেই আমার কাছে।’
তিতে আরও যোগ করেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমরা একটা মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কাজটা গণমাধ্যম এবং সমর্থকদের চেয়ে ভিন্ন। এটা প্রস্তুতি নেওয়া, অনুশীলন করা ও মনোযোগ ধরে রাখার সাথে সম্পর্কিত। তাই অন্য কোনকিছু না ভেবে মূল কাজগুলোর দিকে মনোনিবেশ করছি।’
তবে, তিতে যে কৌশলই করুন না কেন, মেসি ঠিকই জানেন- তাকে কি করতে হবে। আর হাইভোল্টেজ এই ম্যাচে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়েই চ্যাম্পিয়ন হবে লিওনেল মেসির দল। এমনটাই বিশ্বাস করেন আর্জেন্টিনার সাবেক কোচ আলফিও কোকো বাসিলে।
সাবেক এই কিংবদন্তী সেন্টার ব্যাকের মতে, দল হিসেবে ব্রাজিল বর্তমানে খুবই সাদামাটা পারফর্ম করছে। এই সুযোগটাই নিতে হবে আর্জেন্টিনাকে।
মেসির প্রশংসা করে কোকো বলেন, ‘মেসি আছে, তার মানে আমরা ১-০ গোলে জিতে গেছি। সে অসাধারণ ফুটবলার। এই দল এখনও শিখছে। আমি ব্রাজিলের বিপক্ষে শুরুর একাদশে লিয়ান্দ্রো পেরেদেসকে চাই। লাউতারো মার্টিনেজ ভালো পারফরমার। তাকেও আমার অনেক পছন্দ।’
এদিকে, ফাইনালে দারুণ দুটো রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে মেসিকে। ফাইনাল খেলতে নামলেই আর্জেন্টিনা অধিনায়ক ছুঁয়ে ফেলবেন কোপা আমেরিকায় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। যা কার্যত আছে চিলির সার্জিও লিভিংস্টোনের দখলে। তার ম্যাচ সংখ্যা ৩৪টি। মেসির ৩৩টি।
এছাড়াও এবারের আসরে ছয় ম্যাচে চার গোল করেছেন মেসি। সবমিলিয়ে ছয়টি কোপা আমেরিকা খেলে ১৩টি গোল করেছেন ক্ষুদে জাদুকর। সেইসঙ্গে এবার সঙ্গীদের দিয়ে করিয়েছেন আরও পাঁচটি গোল। তাই ফাইনালের সেরা ফর্ম ধরে রেখে এবাররের কোপার শিরোপা জিততে পারলে আরেকবারও যে ব্যালন ডি অর জিতবেন মেসি- তা এক প্রকার নিশ্চিত।
এন-কে